শিরোনাম :
আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে নতুন চমক, ফিরে আসবে বীর দর্পে ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও গণসংহতি দিবসের বাস্তবতা বাউফলে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে ঐতিহাসিক ৭নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত আমার বাবা কর্নেল তাহের——স্মৃতিচারণে জয়া তাহের চট্টগ্রামে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর গণসংযোগে গুলি বর্ষণের নেপথ্যে এক আন্ডার ওয়ার্ল্ড ডন ভোলার মানুষের ভালবাসায় সিক্ত ধানের শীষের প্রার্থী আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর চট্টগ্রামে গণসংযোগ কালে বিএনপি প্রার্থী গুলি বিদ্ধ। সহযোগীকে নির্মমভাবে হত্যা। এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি। Israt jahans unspeakable achievements জরাজীর্ণ ভবনে প্রাণভয়ে ক্লাস করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সারাদেশে উত্থাল পরিস্থিতি। নির্বাচনে কে দেবেন নেতৃত্ব? আর কে হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী?
শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:০৯ অপরাহ্ন

পাকিস্তান – বাংলাদেশ সামরিক শক্তি বৃদ্ধির প্রয়াসে সেনাসদরে জেনারেল ওয়াকার উজ্জামানএবং পাকিস্তানি জেনারেল সাহির শামসাদ মির্জা এর বৈঠক

Reporter Name / ২৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫

ডেক্স রিপোর্টঃ এক সফরেই সেনাপ্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান এবং সরকার প্রধানের সাথে বৈঠক…! এমন নজির আর আছে কিনা জানা নেই।

গত ২৪ অক্টোবর পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ৫ দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে আসেন।

চার তারকা এই জেনারেল প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের পাশাপাশি সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীর প্রধানের সাথে বৈঠক করেছেন। দেশের সর্বোচ্চ ৪জন ব্যাক্তির সাথে সাক্ষাৎ বলে দিচ্ছে এটা সাধারণ কোনো শুভেচ্ছা সফর নয়। নিশ্চয়ই বড় ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত বা পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। এমনকি তিনি চিকেন নেক এরিয়া এবং লালমনিরহাট বিমান ঘাটি পরিদর্শনে যাবেন বলেও শিডিউল আছে।

এর আগে গত ১৪ই অক্টোবর ভারতীয় সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা DGMI এর প্রধান মেজর জেনারেল কুন্দল কুমার সিং তার ৩ সহযোগী সহ গোপন সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। সফরের মেয়াদ ১৬ই অক্টোবর পর্যন্ত হলেও তারা সময় বাড়িয়ে ১৭ই অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করে। এটি ছিলো হাসিনার পতনের পর থেকে আজ পর্যন্ত ভারতীয় সামরিক বাহিনীর একমাত্র বাংলাদেশ সফর। (অথবা বলা যায় ফাঁশ হওয়া একমাত্র সফর)।

তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইন্টেলিজেন্স, অপারেশন, কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল, আর্মী এভিয়েশন এবং আর্মী সাপ্লাই ইউনিটের প্রধানদের সাথে বৈঠক করে। বৈঠকের মুল উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারিকৃত ২৫ সেনা সদস্যকে বাঁচানোর ব্যাপারে ন্যাগোসিয়েশন করা। পাশাপাশি বাংলাদেশ কি পরিকল্পনা করছে এবং কি কি সমরাস্ত্র ক্রয় করছে তা সম্পর্কে ধারনা নেয়ার চেষ্টা করা।

কিন্তু ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো, ভারতীয় এই গ্রুপের সাথে সাক্ষাৎ করেনি সেনাপ্রধান ওয়াকারুজ্জামান। DGMI চীফ কুন্দল কুমারকে ঢাকায় বসিয়ে রেখেই ১৬ই অক্টোবর সকালে ওয়াকার চলে যায় লালমনিরহাট ও ঠাকুরগাঁও বিমানঘাঁটি পরিদর্শনে।

ভারতের প্রান ভোমরা চিকেন নেকের কাছে অবস্থিত এই ঘাটি দুটো পুনরায় চালু করার ঘোষণা আসতেই ভারতের প্যানিক শুরু হয়েছে। আর ভারতীয় গোয়েন্দা টিমকে ঢাকায় বসিয়ে রেখে সেই ঘাটি পরিদর্শনে গিয়ে ওয়াকার কি বার্তা দিলো? অবশ্যই এটা ভারতের জন্য ভালো লক্ষন নয়।

লালমনিরহাট এয়ারবেইস পুনর্গঠনে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে চীন। তবে চীন এর মুল উদ্দোক্তা হলেও প্রজেক্টের সাব-কন্ট্রাক্টর পাকিস্তান। অর্থাৎ চীনের কোঅর্ডিনেশনে পাকিস্তান লালমনিরহাট এয়ারবেইস পুনর্গঠন করছে।

এছাড়া চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে তুরস্কের মাধ্যমে যে ড্রোন কারখানা নির্মান করা হচ্ছে তাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে পাকিস্তান। মুলত পাকিস্তানের কো-অর্ডিনেশনেই মিরসরাইয়ে ড্রোন ফ্যাক্টরি নির্মানের উদ্দোগ নেয় তুরস্ক।

গত জানুয়ারী থেকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে একাধিক উচ্চপর্যায়ের প্রতিরক্ষা বৈঠক ও গোয়েন্দা তথ্যের আদান-প্রদান হয়েছে। দুই দেশের হাই লেভেল সামরিক অথরিটি একে অপর দেশে অনেকগুলো ভিজিট করেছে।

🇧🇩 সর্বপ্রথম ১৪ই জানুয়ারী ২০২৫ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি দল ৬ দিনের পাকিস্তান সফর যান৷ পাকিস্তান সেনা হেডকোয়ার্টারে ফিল্ড মার্শাল আসিফ মুনিরের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর পাকিস্তান বিমানবাহিনী প্রধানের সাথে সাক্ষাৎ করে ৩২ টি JF-17 যুদ্ধবিমান ক্রয় ও প্রশিক্ষনের ব্যাপারে আলোচনা করেন।

🇵🇰 এর ঠিক পরেই ২১শে জানুয়ারি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ISI চীফ ডিরেক্টর জেনারেল শহীদ আমিরের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের সামরিক প্রতিনিধি দল তিন দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছায়। এয়ারপোর্টে দলটিকে রিসিভ করে DGFI এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার মেহদি।

এটি সম্পুর্ন আনঅফিশিয়াল ভিজিট ছিলো, ISPR কোনো ব্রিফ করেনি। এমনকি ISI টিম ক্যান্টোনমেন্টেও যায়নি, হোটেল র‌্যাডিসন ব্লু-তে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। তারা বাংলাদেশের সেনাকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি গাজীপুরে সমরাস্ত্র কারখানা পরিদর্শন করে।

🇧🇩 এরপর ৭ই ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশের নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান পাকিস্তান সফরে গিয়ে সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের সঙ্গে রাওয়ালপিন্ডিতে সাক্ষাৎ করেন।

🇵🇰 এরপর ১লা জুলাই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তিনজন ব্রিগেডিয়ার কক্সবাজারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ম পদাতিক ডিভিশনের সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন।

🇧🇩 এরপর গত ২৩শে আগস্ট পাকিস্তান সফরে যান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমান। তিনি পাকিস্তানের চীফ অব জয়েন্ট স্টাফ জেনারেল
শাহির শামসেদ মির্জার সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।

🇵🇰 সম্প্রতি আরও তিনজন পাকিস্তানি মেজর জেনারেল ঢাকা সফর করলেও তাদের পরিচয় ও সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি।

🇵🇰 এরপর গত ৬ই অক্টোবর সরকারি সফরে ঢাকায় আসেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল তাবাসসুম হায়দার। এই সফরে তিনি সেনাপ্রধান ওয়াকারুজ্জামান সহ আরো কয়েকজনের সাথে বৈঠক করেন।

🇮🇳 ১৪ই অক্টোবর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা DGMI চীফ মেজর জেনারেল কুন্দল কুমার সিং গোপন সফরে বাংলাদেশে এসে সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকর্তার সাথে বৈঠক করেন।

🇵🇰 সর্বশেষ ২৪ই অক্টোবর পাকিস্তানের জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ৫ দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে আসে। যারা এখনো বাংলাদেশে আছেন।

অর্থাৎ জানুয়ারী থেকে এপর্যন্ত বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে কমপক্ষে ৮ টি হাই লেভেল মিলিটারি সফর হয়েছে। এছাড়া গোপনে আরো কত হয়েছে কে জানে। কিন্তু ভারতের সাথে গত ১ বছরে হয়েছে মাত্র ১ টা। বুঝতেই পারছেন পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্ক কি পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে।

এখানেই শেষ নয়। বেসামরিক খ্যাতেও উভয় দেশের হায়ার অথরিটির মাঝে অনেকগুলো সফর এবং বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তানের উপ প্রধানমন্ত্রী, বানিজ্য মন্ত্রী সহ অনেকে বাংলাদেশ সফরে এসেছে। এই মুহূর্তে পাকিস্তান সফরে আছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

➧ দুই দেশ বানিজ্যিক ক্ষেত্রে একাধিক চুক্তি ও সমঝোতা করেছে।
➧ বাংলাদেশ – পাকিস্তান জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশন (জেইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
➧ পাকিস্তান বাংলাদেশে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মানের প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশি স্টুডেন্টদের জন্য স্কলারশিপ ঘোষণা করেছে।
➧ বাংলাদেশি রোগীদের জন্য চিকিৎসা খরচের ২৫% ছাড় ঘোষণা করেছে।
➧ করাচি টু চট্টগ্রাম দুইমুখী নৌপথ চালু হয়েছে।
➧ অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা-করাচি আকাশপথও চালু হচ্ছে।
➧ বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যাবহারের অনুমতি দিয়েছে পাকিস্তান।
➧ পাকিস্তানকে মংলা বন্দর ব্যাবহারের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ।

সবকিছু একটা পরিস্কার বার্তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বলয় থেকে বেরিয়ে পাকিস্তানের সাথে মিলিটারি এলাইনমেন্ট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আর এতেই ভারত পাগল হয়ে গেছে। এলাইনমেন্ট আটকাতে ভারত পুর্ন শক্তি প্রয়োগ করছে।

➧ সরকারের বিভিন্ন পজিশনে থাকা ভারতীয় এজেন্টদের দিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করছে।
➧ কয়েকবার ক্যু করার চেষ্টা হয়েছে,
➧ অন্তবর্তীকালীন সরকারের পতনের চেষ্টা হয়েছে,
➧ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিবাদ বাঁধিয়েছে।
➧ কিছু দলকে ইতিমধ্যে হাত করে ফেলেছে।
➧ একটা রাজনৈতিক দলকে দিয়ে J-10C ডিলে বাঁধা দিচ্ছে।
➧ সর্বশেষ ইসকনকে পুর্নমাত্রায় এক্টিভ করেছে।
তথ্যসূত্রঃ  ১. Daily star bangla
২.   Defence Technology Of Bangladesh

 ৩.বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category