◊
স্টাফ রিপোর্টার :আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫বছরের শাসনামলে বিভিন্ন সময়ে গুম হত্যারশিকার ভুক্তভোগীরা বৈষম্যহীন ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিদেশে পালিয়ে থাকা আসামিদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার করে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান তারা। গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত ১৫সেনা কর্মকর্তার হাজিরার পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তারা এসব কথা বলেন। ভুক্তভোগীরা বলেন, অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা আইন অনুযায়ী জেলে ডিভিশন (বিশেষ সুবিধা) পেতে পারেন।কিন্তু সাব-জেলের নামে কোন বৈষম্য করা যাবে না। ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গনে প্রতিক্রিয়া জানান গুমের ভুক্তভোগী ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহিল আমান আযমী,লে. কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) হাসিনুর রহমান, ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেম আরমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল চৌধুরী ইকবাল চৌধুরী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান প্রমুখ। আয়নাগরে দীর্ঘ আট বছর ঘুমের শিকার আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, অভিযুক্ত এসব সেনা কর্মকর্তা Rab এ এসেএসব অপরাধে জড়িয়েছেন।কিন্তু তাদের সংখ্যা এক শতাংশও নয়। তাই তাদের অপকর্মের জন্য পুরুষেরা বাহিনীকে জড়িয়ে নিন্দা করা সমীচীন নয়। এর দায়ভার পুরো সেনাবাহিনীকে দেওয়া যাবে না।মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িতদের কঠুর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে সেনা কর্মকর্তা বলেন যারা ভবিষ্যতে প্রধান সরকার প্রধান ও বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান হবেন তাদের একটা বার্তা দিতে চাই—-অন্যায়,জুলুম ও মানুষের অধিকার লঙ্ঘন করে কেউ পার পেতে পারে না। সব অপরাধীকে বিচার পেতে হবে। তবে আমি এটিও আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই — তারা সুবিচার পাক;তাদের যা বক্তব্য তারা যেন তা বলতে পারে। আদালত তাদের বক্তব্য শুনে যেন তাদের প্রতি সুবিচার করে, আমি সেটাই চাইবো। মীর আহাম্মেদ বিন কাশেম আরমান বলেন, সেনানিবাসের ভেতরে কোড সঠিকভাবে অনুসরণ হচ্ছে কী,না তা নিশ্চিত করতে হবে। তারা যেন কোনভাবে কর্মরত সেনা সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করছেন কী, না এটি নিশ্চিত করা খুবই জরুরী। অন্যথায় আমরা যারা ভুক্তভোগী ও সাক্ষী আছি আমাদের জীবনের ওপর একটা হুমকি থেকে যাবে।তিনি আরো বলেন, আসামিরা গ্রেপ্তার অবস্থায় ক্যান্টনমেন্টে অবস্থানকালে বিচারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে তা হবে খুবই আতঙ্কজনক বিষয়। তাই জেল কোড সঠিক ভাবে অনুসরণ করতে হবে। জনগণের রক্ষক সেনা বাহিনীকে আর কোনদিন যেন জনগণের মুখোমুখি করা না হয় এমন প্রত্যাশা করে আরমান বলেন, একজন ভুক্তভোগী হিসেবে আমার প্রত্যাশা দেশ প্রেমিক সেনা সদস্যদের দিয়ে আর যেন ভাড়াটে খুনির কাজ করা না হয়। আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনী যেন আর কোনদিন কোন শক্তির পুতুল না হয়ে যায় সেটা এ বিচারের মাধ্যমে নিশ্চিত হবে বলে আমার বিশ্বাস। হাসিনুর রহমান বলেন, আসামিদের ব্যাপারে কোন বৈষম্য নীতি প্রযোজ্য হবেনা।অন্য সাধারণ আসামীদের তাদেরকেও জেলে রাখতে হবে।যেভাবে রাখা হয়েছে পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। প্রয়োজনে তাদের ডিভিশন দেওয়া যেতে পারে। অভিযুক্তদের ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল চৌধুরী বলেন, তারা এসেছেন এবং তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি যারা বিদেশ আছেন তাদের ইন্টারপুলের মাধ্যমে ধরে এনে হাজির করা হোক এটাই আমার দাবি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান বলেন, আজকে আমরা এ দিনটা দেখতে পারছি এটা আপনাদের ( সাংবাদিক)কারণে। দেশের মানুষের চাপের কারণে। তিনি বলেন, আরো অনেক অপরাধী মুক্ত আছেন।আমাদের মামলা সকল অপরাধীর বিরুদ্ধে।ওদের (অভিযুক্তসেনা কর্মকর্তা) যেন প্রিজন ভ্যানে না এনে, এসি রুমে না রেখে, অফিসার্স মেসের খাবার না খাইয়ে আমাদের যেভাবে রাখা হয়েছিল সেভাবে যেন রাখা হয় কারণ তারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছেন। তাদের কে ভিআইপি মর্যাদায় ক্যান্টনম্যান্টে রাখা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
তথ্যসূত্র: দৈনিক আমার দেশ সহ
বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়া।
২২ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি.◊