আহমেদ জহুর :ডা. জাহেদ, রুমিন ফারহানা ও জাহেদের স্ত্রী আনা নাসরিনকে নিয়ে কয়েকদিন ধরে তোলপাড় চলছে সোসাল মিডিয়ায়। বিতর্কের অবতারণা হয় প্রবাসী ইলিয়াস হোসেনের একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে। ভিডিওতে তিনি দাবি করেন, রুমিন ফারহানা ও ড. জাহেদ উর রহমানের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে।
এছাড়া, এর বিচার চেয়ে ড. জাহেদ উর রহমানের স্ত্রী আনা নাসরিন একজন সাংবাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলেও ওই ভিডিওটিতে দাবি করেন প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস। তবে ইলিয়াসের সেই ভিডিও আনা নাসরিন তার ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করে জানান, রুমিন ফারহানা তার পারিবারিক জীবনে আঘাত হানলেও তিনি এজন্যে বিচার চেয়ে কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। গত ১৭ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে আনা নাসরিনের দেয়া পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হল। লেখাটি পড়লে সবাই প্রকৃত ঘটনা জানতে পারবেন। — আহমেদ জহুর।
#ছবি কোরিওগ্রাফি নিজ।
‘বিশেষ বিবৃতি’ শিরোনামের ওই পোস্টে তিনি লেখেন-
“২১ জুন ২০২৫, আমাকে একটি অজ্ঞাত আইডি থেকে জানানো হয়— একজন প্রভাবশালী নেত্রীর কাছে আমার দাম্পত্য সঙ্গীর একটি ব্যক্তিগত ভিডিও রয়েছে। অভিযোগ করা হয়, উক্ত ভিডিও ব্যবহার করে তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত আমার দাম্পত্য সঙ্গীর কাছ থেকে বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা আদায় করছেন— সংসদের হ্যান্ডলার্স লেখানো থেকে শুরু করে বিদেশি দূতাবাসে চাপ সৃষ্টি করে ইনভাইটেশন করানো, এমনকি আরও কিছু বিষয়, যা উচ্চারণ করা শিষ্টাচারবহির্ভূত। তথ্যদাতার দাবি, উক্ত ভিডিওটি তার নিজের কাছেও আছে।
এ কথা জানার পর আমার দাম্পত্য সঙ্গী ধারণা প্রকাশ করেন যে, আইডিটি হয়তো গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট। পরবর্তী সময়ে উক্ত আইডি থেকে আমাকে অনেকবার মেসেঞ্জার ভিডিও কল করে ভিডিওটি দেখানোর চেষ্টা করা হয়। আমি নীতিগতভাবে কারো ব্যক্তিগত ভিডিও দেখা গর্হিত মনে করায়, কখনোই সেই কল রিসিভ করিনি।
ব্যাকগ্রাউন্ড:
৬/৭ এপ্রিল ২০২৪: আমার দাম্পত্য সঙ্গী স্বীকার করেন— তার ব্যক্তিগত একটি ভিডিও তার এক প্রাক্তন প্রেমিকার মাধ্যমে ২০১৯ সনে এক প্রভাবশালী নেত্রী হস্তগত করেন। ২০১৯ থেকে আমার দাম্পত্য সঙ্গী বারবার কথাবার্তা ও আচরণে জিম্মিত্ত্বের বিবিধ ইঙ্গিত দিয়ে আসছেন।
২১ জানুয়ারি ২০২৫: BRAIN এর আয়োজনে বাংলা একাডেমির এক আলোচনা সভায় আমার দাম্পত্য সঙ্গী এক প্রভাবশালী নেত্রীর চাপের কথা বলে আমাকে উক্ত অনুষ্ঠানে না যেতে বোঝানোর চেষ্টা করেন এবং আমাকে নিবৃত করতে না পেরে পরবর্তীতে তিনি নিজেও উক্ত আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। এ ঘটনা জানার পর ২১জানুয়ারি আমার বড় ননদ ঘটনার ভয়াবহতা অনুমান করতে পেরে অফিসে থাকা অবস্থায় একটি মাইল্ড হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন এবং দুই দিন আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
১১ মে ২০২৫: আমার দাম্পত্য সঙ্গী আমাকে জানান— তিনি ভীষণ বিপদে আছেন, আমার সাহায্য তার প্রয়োজন, তবে বিস্তারিত বলতে অক্ষম, তাই আরো সময় চান।
২৩ মে ২০২৫: আমি এই “বুদ্ধিবৃত্তিক ডাকাতি” প্রতিহত করার চেষ্টা করলে ২১ জুন ২০২৫ থেকে ফেইসবুক মেসেঞ্জারে ধারাবাহিকভাবে আমার কাছে তথ্য আসতে থাকে যে, কোন এক প্রভাবশালী নেত্রী আমাকে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেছেন।
৫ জুলাই ২০২৫: এই খবর জানার পর আমার বাবা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ৫দিন সিএমএইচ-এ চিকিৎসাধীন ছিলেন।
১১ জুলাই ২০২৫: আমি জিডি করার কথা বললে, আমার দাম্পত্য সঙ্গী মিডিয়া ট্রায়ালের ভয়ে আমাকে নিবৃত্ত করেন। একইসঙ্গে, আমার অগোচরে তিনি আমার ভাই, বোন এবং বন্ধু রুমার কাছে আমাকে মানসিক রোগী হিসেবে চিহ্নিত করে জিডি করা থেকে প্রতিহত করতে চেষ্টা করেন।
৩ আগস্ট ২০২৫: আমার দাম্পত্য সঙ্গী ডা. নাসিম জাহান (অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, সাইকিয়াট্রি)-এর কাছে সিডিউল বুক করে আমাকে জোরপূর্বক পাঠানোর চেষ্টা করেন, যাতে ভুয়া মানসিক সনদ তৈরি হতে পারে—এই সন্দেহে আমি সেখানে যাইনি।
২০১৬ থেকে পরিচিত এক সাংবাদিক সেপ্টেম্বর মাসে আমাকে বহুবার ফোন করার পর ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তার সাথে কথা বলি। তিনি কৌশলে আমার দাম্পত্য সঙ্গী সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত তথ্য আদানপ্রদানের চেষ্টা ও আমাকে উস্কানোর চেষ্টা করেন। পূর্বে (২০১৮ থেকে) তিনি আমাকে আমার দাম্পত্য সঙ্গী সম্পর্কে অনেক বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবরাহ করেছেন। আমি নিশ্চিত যে, আমার নাম ব্যবহার করে তিনিই ইলিয়াস হোসেনের কাছে বিকৃত তথ্য পাঠিয়েছেন।
কারণ “ডঃ জাহেদ রুমিন ফারহানার পার্ট-টাইম হাজব্যান্ড”—এই উক্তি আমি কেবল তার মুখে শুনেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে একজন চটকদার কনটেন্ট মেকার ইলিয়াস হোসেন ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে একটি আপত্তিকর ভিডিও বানান, যেখানে আমার দাম্পত্য সঙ্গীকে চারিত্রিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করা হয়।
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫: ইলিয়াস হোসেন নিজের পেজে পোস্ট করে লেখেন— “অপেক্ষা করুন, কাজ চলছে।” এই বাক্যে কারসাজির ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এই পোস্টে তিনি একাধিক ভিডিও প্রকাশের ইঙ্গিত দেন। অথচ আমার জানা মতে মাত্র একটি ভিডিও বিদ্যমান। আমার সমস্ত তথ্য, প্রমাণ ও বিবৃতি “Personal Journal”-এ টাইমস্ট্যাম্পসহ সংরক্ষিত এবং আমার আইনজীবীর Surjo Polas কাছে জমা রয়েছে।
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫: আমাকে জানানো হয়, একদল এডিটর নকল ছবি/ভিডিও তৈরি করছে, যা ইলিয়াস হোসেনের মাধ্যমে প্রচার করা হবে।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫: আমাকে জানানো হয়, আমার দাম্পত্য সঙ্গীকে নানারকম ট্যাগ দিয়ে আক্রমণের ষড়যন্ত্র চলছে। আমি সেই সাংবাদিককে তার আইনি দায়বদ্ধতার বিষয়ে সতর্ক করলে উক্ত সাংবাদিক নিজের দায় অস্বীকার করেন।
আজ আমি যখন ইলিয়াস হোসেন এবং উক্ত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করতে চাই, তখন আমার দাম্পত্য সঙ্গী ডঃ জাহেদ উর রহমান আমার বড় ভাইকে হোয়াটসঅ্যাপে কল করে বলেন— “আমি মামলা করলে তিনি আমাকে ডিভোর্স দেবেন।”
এতে আমার ধারণা দৃঢ় হয় যে, সত্যিই হয়তো ইলিয়াস হোসেনের কাছে একটি গোপন ভিডিও বিদ্যমান।
আমার ঘোষণা:
আমি সকলকে সতর্ক করছি— আমার দাম্পত্য সঙ্গীর কোনো আসল বা নকল ভিডিও যেন কেউ প্রকাশ না করে।
আমার দাম্পত্য সঙ্গীর যদি আমার কাছে কোনো অপরাধ থেকে থাকে, আমি আইনগত পথে তা মোকাবিলা করবো। কোনো সাংবাদিক বা জনগণের কাছে আমি বিচার প্রার্থনা করবো না ও করিনি।
আমার কাছে আমার দাম্পত্য সঙ্গীর দাম্পত্য অপরাধ থাকলে, সেই বিষয়ে অভিযোগ আনার একমাত্র আইনগত অধিকার আমার।
কারো ব্যক্তিগত ভিডিও ধারণ, সংরক্ষণ, প্রচার বা প্রকাশ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি:
২০১১ সালে মডেল/অভিনেত্রী প্রভার ব্যক্তিগত ভিডিও প্রকাশিত হলে, আমার দাম্পত্য সঙ্গী নিজেই bdnews24.com-এ একটি প্রতিবাদী লেখা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি সবসময়ই ব্যক্তিগত গোপনীয়তার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন।
আমি বিশ্বাস করি— যৌন গোপনীয়তা কেবল নারীর অধিকার নয়, পুরুষেরও সমান অধিকার।
স্ক্রিনশটসমূহ সেন্সর করে কমেন্ট বক্সে দেয়া হবে।
বি.দ্র. প্রতিবেদক,আহমেদ জহুর একজন ব্লগার এণ্ড সোশ্যাল এক্টিভিস্ট।