সাজেদ রহমান:২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নড়াইলের কালিয়া থানার বেন্দা গ্রামে গিয়েছিলাম কমল দাশগুপ্তের পৈতৃক বাড়ি খুঁজতে। বারুইপাড়া ঘাট পার হয়ে মধুমতীর তীর ধরে খুঁজলেও কেউ ঠিকানা বলতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত অরুনিমা ইকো টুরিজম পার্ক ঘুরে ফিরে আসি, হাতে শুধু গ্রামের এক খালের ছবি। আর সেই খাল আজ আমার স্মৃতিতে অদৃশ্য অথচ প্রাণবন্ত হয়ে আছে। ১৯১২ সালের ২৮ জুলাই জন্ম নেওয়া কমল দাশগুপ্ত ছিলেন বাংলা সংগীতের এক অসাধারণ সুরকার। শৈশব থেকেই পেতেন সঙ্গীতময় পরিবেশ। বাবা ধ্রুপদে শিল্পী, কাকা তবলাবাদক, ছোট ভাই সুবলও গায়ক; আর বড়দা বিমল দাশগুপ্তের কাছে শিখেছেন সুর সৃষ্টি। ১৯৩২ সালে তার প্রথম রেকর্ড বের হয়, এরপর নিজেই লিখে, সুর করে এবং গেয়ে জনপ্রিয়তা পান। কাজী নজরুল ইসলামের অসংখ্য গান—‘বলেছিলে তুমি তীর্থে আসিবে’, ‘তুমি হাতখানি যবে রাখো মোর’—তাঁর সুরে জীবন্ত হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য সিনেমায় সংগীত পরিচালনা করেছেন। ফিরোজা বেগম, কানন দেবী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়দের কণ্ঠে তাঁর সুর আজও শোনা যায়। কিন্তু জীবনের শেষাংশ সুখকর ছিল না। ব্যাংক দেউলিয়া, প্রিয়জনের মৃত্যু, আর্থিক বিপর্যয়—সব মিলিয়ে তিনি নিঃস্ব ও হতাশ হয়ে পড়েন। শেষ জীবনে মুদি দোকান চালাতে হয়, হাসপাতালের বেডও জোটেনি। ১৯৭৪ সালের ২০ জুলাই তিনি চলে যান।
পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা মনে করিয়ে দেয়, “কাজী নজরুল ইসলামের পর বাংলা গানের বাণিজ্যিক খতিয়ান হলে সর্বাগ্রে আসা উচিত কমল দাশগুপ্তের নাম।” এত প্রতিভার মানুষ, এত সুরের জাদুকর, তাঁর কৃতিত্ব আমরা কি যথাযথ সম্মান দিতে পেরেছি?
সাজেদ রহমান। বি.দ্র. কমলদাশ গুপ্ত পরে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে নজরুল সংগীত শিল্পী ফিরোজা
বেগম কে বিয়ে করেন।প্রখ্যাত গিটারিস্ট শাফিন ও হা- মীম আহমেদ তার সন্তান। প্রতিবেদক,একজন লেখক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
ব্যক্তিত্ব ও