নরসিংদী শহরের নাগরিয়াকান্দি বালুর মাঠে মিল শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদী। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২জনকে আটক করেছেন তারা।
মো: আজিজুল হক : বুধবার (৫ মার্চ) বেলা ১২টায় পিবিআই নরসিংদী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশ সুপার (এডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মোঃ এনায়েত হোসেন মান্নান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার লক্ষণখোলা গ্রামের ইমাম হোসেনের ছেলে মোঃ ফরহাদ (২১) ও নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের কড়ইকান্দি গ্রামের মোঃ রহমানের ছেলে বিল্লাল মিয়া ওরফে রনি।এসময় তাদের কাছ থেকে লুন্ঠিত হওয়া ১টি বাইসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
পিবিআই পুলিশ সুপার (এডিশনাল ডিআইজি)
মোঃ এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, এরশাদ মিয়া বয়স ২৫ বছর। পেশায় একজন পাওয়ালুম শ্রমিক। সদর উপজেলার মাধবদী থানাধীন, মহিষাশুড়া ইউনিয়ন, শান্তি ভাওলা গ্রামের আব্দুল খালেক মিয়ার ছেলে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার দিকে নিজ বাড়ী থেকে বের হয়ে বাইসাইকেল যোগে কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন যে ওইদিন সে তার কর্মস্থল যাননি। অনেক খোঁজাখুজির পর পরের দিন সকালে জানতে পারেন যে, অজ্ঞাত ব্যক্তিরা গলাকেটে এরশাদের লাশ নাগরিয়াকান্দি বালুর মাঠে ফেলে রেখেছে। উক্ত ঘটনার পর নরসিংদী মডেল থানায় মামলা দায়েরের পর পিবিআই নরসিংদী কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পিবিআই এর একাধিক দল নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ সহ বিভিন্ন জেলায় অভিযান পরিচালনা করে নারায়ণগঞ্জ থেকে ফরহাদ ও কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে নিহত এরশাদের ব্যবহৃত লুন্ঠিত বাইসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের সাথে নিহত এরশাদের পূর্ব পরিচিত। তারা একসাথে দীর্ঘদিন ধরে পাওয়ালুম শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছিল। সেই সুবাদে এরশাদের কাছ থেকে অনলাইনে জুয়া খেলার টাকা হাতিয়ে নিতে ফন্দি আঁটেন। এরশাদকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অন্যত্রে নিয়ে গিয়ে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন থেকে অনলাইন ব্যাংকিং থেকে টাকা তুলে নিয়ে গেলে এরশাদ বাঁধা দেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে দস্তাদস্তি হয়। একপর্যায়ে রনির সাথে থাকা চাকু দিয়ে গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে সে মারা গেলে তার ব্যবহৃত বাইসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় এবং তার ব্যবহৃত মুঠোফোন থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৬৫০০ টাকা উত্তোলন করেন।
পরে আসামীদের পুলিশী প্রহরায় আদালতে প্রেরণ করলে উক্ত আসামীরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেন। নিহত এরশাদ মিয়া শিক্ষা জীবনে একই গ্রামের ইউএমসি আদর্শ বিদ্যালয় থেকে ২০১৭সালে এসএসসি পাশ করেন, এবং কর্মস্থল হিসেবে পাওয়ারলুমে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। এরশাদ মিয়ার পরিবার দোষীদের ফাঁসি দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ ফেব্রুয়ারী সকালে নরসিংদী পৌরশহরের নাগরিয়াকান্দি বালুর মাঠে অজ্ঞাত (২৫) একব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে নরসিংদী মডেল থানা পুলিশ।