শাহ আলী তৌফিক রিপন ,বিশেষ প্রতিনিধি :
নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় মাছ শিকারী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, সংঘর্ষের সময় শতাধিক যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৪০ জনকে আটক করেছে।
শনিবার (৮ মার্চ) সকালে উপজেলার রসূলপুর গ্রামের পাশের ধনু নদীর ফেরিঘাটে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলার ইজারাকৃত জলমহালে মাছ লুটপাটের উৎসব চলছে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে। প্রতিদিনই নেত্রকোনার বিভিন্ন উপজেলা এবং পাশ্ববর্তী জেলা থেকে শত শত মানুষ এসে এসব জলমহালের মাছ লুট করছে। ইজারা মূল্য হিসেবে এসব বিলে প্রায় চার কোটি টাকার মাছ রয়েছে। প্রশাসনের বাধা সত্ত্বেও মাছ লুটের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
শনিবার সকালে কাঠালজান ও মরাগাঙ্গে মাছ লুটের উদ্দেশ্যে মাছ শিকারীরা ধনু নদীর পাড়ে জড়ো হলে ফেরিঘাটের স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। স্থানীয় লোকজন সংঘর্ষে যোগ দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষের প্রায় অর্ধশত লোক আহত হন। এছাড়া বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা মাছ শিকারীদের পরিবহন হিসেবে ব্যবহৃত শতাধিক পিকআপ, অটোরিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে ভাঙচুর চালায় এবং কিছু গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে ১৫-২০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নয়ন ঘোষ। তবে অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েই চলে যাচ্ছেন।
খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মকবুল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে আছি এবং আরও তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। মাছ শিকার ও জলমহাল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।