শাহ আলী তৌফিক রিপন,বিশেষ প্রতিনিধি :
আজ ৫ এপ্রিল ২০২৫ কেন্দুয়া ( নেত্রকোনা )
ছবিলা ও বলাই শিমুল গ্রামের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব ও সহিংসতার অবসানে সকাল ১১টায় কেন্দুয়া উপজেলার আশুজ্জিয়া জে এন সি উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠিত হলো এক নজিরবিহীন দরবার। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির দুই প্রভাবশালী নেতা ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী ও দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলালের ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগে সমাধান হলো সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষজনিত এই গ্রামীয় বিরোধ।
উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে ছবিলা ব্রীজের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে ছবিলা ও বলাই শিমুল গ্রামের মাঝে ভয়াবহ সংঘর্ষ সংঘটিত হয়। এতে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন, ঘটে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ড ও লুটপাটের ঘটনা। ঘটনার পর এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
এই পরিস্থিতিতে দুই গ্রামের শান্তি ও সম্প্রীতির স্বার্থে রাজনৈতিক মতানৈক্য ভুলে হাত মিলিয়ে এগিয়ে আসেন বিএনপির দুই ক্যারিশমাটিক নেতা ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী ও দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল। আজকের দরবারে তাঁদের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে সিদ্ধান্ত হয়….
বলাই শিমুল গ্রামের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২ লক্ষ টাকা এবং লুটকৃত মালামাল ফেরত দেওয়া হবে।
ছবিলা গ্রামের রশিদের পরিবার পূর্বের সালিশ অমান্য করায় তাদের পক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।
মোট ১২ লক্ষ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে বণ্টন করা হবে।
ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে এবং এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই গ্রামের অংশগ্রহণে একটি যৌথ কমিটি গঠন করা হবে, যারা ছবিলা ব্রীজ এলাকায় নিয়মিত নজরদারি করবে।
দরবারে উভয় পক্ষ এই সিদ্ধান্তসমূহ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেনে নেয় এবং উপস্থিত সবার সামনে দুই গ্রামের মানুষ একে অপরকে জড়িয়ে ধরে সম্প্রীতির বার্তা দেন। মুহূর্তটি ছিল আবেগঘন ও দৃষ্টান্তমূলক।
দরবারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী। দরবারের সভাপতিত্ব করেন দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল। সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান ভুইয়া মজনু।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন—
আবুল কালাম আজাদ (সমন্বয়ক, বলাই শিমুল মাঠ আন্দোলন)
সেকুল ইসলাম খান (সভাপতি, কেন্দুয়া প্রেসক্লাব)
আব্দুল হাই সেলিম (সাধারণ সম্পাদক, কেন্দুয়া প্রেসক্লাব)
লুৎফর রহমান ভুইয়া (সহ-সভাপতি, কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাব)
ইদ্রিস ভুইয়া (সভাপতি, বলাই শিমুল ইউনিয়ন বিএনপি)
আলী আকবর ভুইয়া মল্লিক (প্রাক্তন চেয়ারম্যান, বলাই শিমুল ইউনিয়ন)
হারুনুর রশিদ (প্রাক্তন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান)
শফিকুল ইসলাম শফিক (উপজেলা বিএনপি নেতা)
জসীম উদ্দিন খোকন (প্রাক্তন সাংগঠনিক সম্পাদক, পৌর বিএনপি)
শাওন খন্দকার জুয়েল (নেতা, পৌর বিএনপি)
পাশাপাশি দুই গ্রামের শত শত মানুষ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থেকে এই শান্তিচুক্তির সাক্ষী হন।
এটি শুধু একটি সংঘর্ষের সমাপ্তি নয়, বরং রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে নেতৃত্ব কেমন হতে পারে—তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। স্থানীয় জনগণের মতে, এ ধরনের ইতিবাচক উদ্যোগ সমাজে শান্তি, সহাবস্থান ও ঐক্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।