কেন্দুয়া বিএনপি’র পুরনো কমিটি নিয়ে চরম বিপাকে দলীয় নেতাকর্মীরা
শাহ আলী তৌফিক রিপন
কেন্দুয়া,নেত্রকোনা।
নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির পুরনো কমিটিগুলোর একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড প্রকাশ্যে আসায় দলে অস্থিরতা বিরাজ করছে। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে চাপা ক্ষোভ। বিশেষত গত কয়েক মাস ধরে দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠে আসায় সাধারণ নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে দোকান দখল নিয়ে বিরোধ গড়ায় ভয়াবহ সংঘর্ষে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে, যেখানে প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ১২ বছর ধরে চলমান এই বিরোধ সংঘর্ষের রূপ নেয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। দলীয় নেতাদের ভূমিকা নিয়ে কর্মীরা নানা প্রশ্ন তুলছেন।
তারপর ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার পাইকুরা ইউনিয়নের সদ্য সাবেক সভাপতি আবুল হাসেম ভূঁইয়ার বাড়ি থেকে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে টিসিবির ১৮০ কেজি চাল, ৭০ কেজি মসুর ডাল এবং ৭২ লিটার সয়াবিন তেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তাকে আটক করে কেন্দুয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে ৯ অক্টোবর তাকে দলের সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করে পুরো ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
৪ অক্টোবর রাতে রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ মোস্তফা কামাল বাবলু (৫০) সহ আরও দুইজনকে যৌথবাহিনী জুয়া খেলার সাথে সংস্লিষ্ঠতার কারনে আটক করে। দলের নেতাকর্মীদের দাবি, এইসব নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিনের, কিন্তু দলীয় কমিটি কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।
পৌর বিএনপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মজনু খন্দকার বলেন, “দলীয় ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়েছে, কারণ দলের বর্তমান নেতৃত্ব দুর্নীতির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এই কারণে দলের কর্মীরা হতাশ।” তিনি আরও বলেন, “দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে নেত্রকোনা জেলা ও কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির পুরনো কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন ও ত্যাগী নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এখনই হস্তক্ষেপ করা উচিত।”
দলের বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগ প্রত্যাশা করছে স্থানীয় কর্মী ও সমর্থকরা। নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে দল আবারও উজ্জীবিত হবে, এমন আশা ব্যক্ত করেছেন তৃণমূল নেতারা।