শিরোনাম :
গৌরিপুরে মাদক সহ শ্বশুর- জামাই গ্রেফতার জটিল রোগে আক্রান্ত শাম্মী বাঁচাতে চায় ম্যাজিস্ট্রেট সাজ্জাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ নরসিংদী ডিসি অফিসের কর্মচারীগণ সমন্বয়ক পরিচয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি, কে এই রফিকুল ইসলাম রিফাত ওরফে ট্যারা রিফাত? তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা ফেঁসে যেতে পারেন আড়াইহাজার থানার ওসি মো: এনায়েত হোসেন ভোলায় ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচিতে লাখো মানুষের ঢল আগামী জুন ২০২৫ এর মধ্যে পিলখানায় ৫৭ সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে- অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনুস কলাপাড়ায় কৃষকদের অবস্হান ধর্মঘট ও স্মারক লিপি প্রদান কেন্দুয়ায় এলডিডিপি প্রকল্পের উপকরণ বিতরণ প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে খামারিদের মাঝে ট্রলি, ল্যাক্টোমিটার, বার্মিজ ও বেলচা বিতরণ ঘোড়াশাল নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে প্রাণ আরএফ এল এর ড্রাইভার নিহত
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৭ অপরাহ্ন

নরসিংদীতে মাদকের টাকা ভাগ- ভাটোয়ারা নিয়ে এবার ফেঁসে গেলেন ০১ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সহ ০২ পুলিশ কর্মকর্তা

Reporter Name / ৪০ Time View
Update : রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫

মো: মাহবুবুর রহমান খান:রক্ষক যেখানে ভক্ষক,আইন সেখানে খাঁচায় বন্দি।ঘটনার সূত্রপাত নরসিংদী জেলা
শহরে আদালতের মালখানা থেকে ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রি করে দেয়ার নিন্দনীয় ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সাথে পুলিশের দুই পরিদর্শক এবং এক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এমন চাঞ্চ্যলকর ঘটনা ঘটেছে নরসিংদী জেলায়। অভিযুক্তরা হলেন নরসিংদী কোর্ট পরিদর্শক খন্দকার জাকির হোসেন ও নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পরিদর্শক এস এম কামরুজ্জামান এবং চিফ জুডিশিয়াল আদালতের এক জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট। এ খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে গত শনিবার সকালে তাৎক্ষনিক দুই পরিদর্শককে নরসিংদী পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করার আদেশ দেন নরসিংদীর পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান। অপর আরেক আদেশে পরিদর্শক মো: আবুল কায়েস আকন্দকে নরসিংদী গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক এবং মো: সাইরুল ইসলামকে সদর কোর্টের পরিদর্শক হিসেবে বদলির আদেশ দেন।

এরপরই জেলাব্যাপী শুরু হয় নানা জল্পনা কল্পনা। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই দুপুরে দিকে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন আরেক আদেশে অভিযুক্ত দুই পরিদর্শককে ঢাকায় বদলির আদেশ দেন। কয়েক ঘন্টার মধ্যে পুলিশের এমন রদবদলের পর নড়েচড়ে বসে জেলার পুরো পুলিশ প্রশাসন।

এদিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও চিফ জুডিশিয়াল আদালতের নথি ঘেঁটে জানা যায়, গত ০৫ ফেব্রুয়ারি নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিগড় থেকে ৬ বস্তা গাঁজা উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। প্রতি বস্তায় ১৬ কেজি করে ৬ বস্তায় মোট ৯৬ কেজি গাঁজা ছিলো। পরবর্তীতে বিপুল পরিমাণ এই গাঁজা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে আনা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় থেকে কাগজে কলমে আদালতে পাঠানো হয়েছে মর্মে দেখানো হয়। প্রকৃতপক্ষে বিপুল পরিমাণ এই মালামাল আদালতের মালখানায় নেয়া হয়নি। আদালতে নেয়ার আগেই পুলিশ ও বিচারকরা মিলে এই মাদকদ্রব্য বিক্রি করে টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। মাদক বিক্রি করার দুই দিন পর কাগজে কলমে গত ১১ মার্চ এ মাদকদ্রব্য ধ্বংস করার এক প্রমানপত্র তৈরী করা হয়।

তবে মালখানায় বিপুল পরিমাণ এত মাদক দ্রব্য আছে কি নাই তার কোন খোঁজ রাখেননি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ লুৎফল মজিদ নয়ন। মালখানা যাচাই বাছাই না করেই তিনি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল হকের উপস্থিতিতে এ মাদকদ্রব্য ধ্বংস করার নির্দেশ দেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল হকও সহজেই কাগজে কলমে এ মাদক ধ্বংস দেখিয়ে দেন।

এ বিষয়ে জানার জন্য চীফ জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ লুৎফল মজিদ নয়নের কাছে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে হোয়াটসআ্যপে পরিচয় দিয়ে এসএমএস পাঠালেও তিনি এর কোন উত্তর দেননি।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট রাকিবুল হককে ফোন করলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ভবিষ্যতে এমনটি আর কখনোই হবেনা। এ যাত্রায় তাকে ক্ষমা করে দেয়ার আকুতি জানান।

পুলিশ ও আদালতের একটি সুত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরেই নরসিংদীর আদালত প্রাঙ্গনে পুলিশ বিচারক মিলে এ অবস্থা চালু করেছেন । আগে প্রকাশ্যে মাদকদ্রব্য পুড়ানো হলেও এখন আর তা করা হয় না।

এদিকে মালখানার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর শামীম এক প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশ সুপার কার্যালয়ে। প্রতিবেদনে তিনি জানান, গত ১১ মার্চ কোন মাদকদ্রব্য ধ্বংস করতে দেখেননি তিনি। ডিবির ওসি কামরুজ্জামান বার বার তাকে ডিবি অফিসে এনে কিছু টাকা নেয়ার চাপ দেন । টাকা না নিতে চাইলে তিনি তাকে হুমকি ধমকি দেন। কাগজে কলমে সব ঠিক রাখলেও এখানে বিশাল অনিয়ম হওয়ার কথা স্বীকার করে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গত দুই মাসে আদালত প্রাঙ্গনে কোন মাদকদ্রব্য পোড়াতে দেখেননি তিনি।

পুলিশের আরেক পরিদর্শক এই প্রতিবেদকে জানান, ৯৬ কেজি গাঁজা সাড়ে ৯ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। মাদক বিক্রির এ টাকা থেকে সাড়ে ৩ লাখ পেয়েছে বিচারক আর ৬ লাখ টাকা পেয়েছে পুলিশ। মাধবদীর কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মায়ার কাছে এ গাঁজা বিক্রি করা হয়। তবে বিক্রিত গাঁজার মধ্যে ৪৫ কেজি গাাঁজা মায়ার কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। বাকী গাঁজা ডিবির ওসি কামরুজ্জামানের হেফাজতেই রয়েছে। আদালতের মালখানায় কোনো মাল প্রেরণ করা হয়নি।

অপরদিকে সদ্য বিদায়ী কোট পরিদর্শক জাকির হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান এ প্রতিবেদককে।

মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে এনে এ কায়দায় বিক্রি করার কারণেই জেলা থেকে মাদক নির্মূল করা যাচ্ছে না বলে মত দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। এতে করে জেলা জুড়ে বাড়ছে মাদক সেবী ও মাদক বিক্রেতাদের সংখ্যা। বাড়ছে নানা অপরাধ ও খুনোখুনির ঘটনা।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: কলিমুল্লাহকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধানপুর্বক তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিদেন দাখিল করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
তথ্য সূত্র:News Narsingdi 24


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category