শাহ আলী তৌফিক রিপন
কেন্দুয়া প্রতিনিধি ( নেত্রকোনা )
বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে এক ধরনের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, যেখানে অপরাধী প্রমাণিত হলেও তার পক্ষে কিছু না কিছু সমর্থন পাওয়া যায়। এ সংস্কৃতির কারণে অপরাধীদের শাস্তি প্রদানের প্রক্রিয়াগুলো বারবার বাধাগ্রস্ত হয়। সম্প্রতি পাইকুরা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল হাসেম ভূঁইয়া যৌথবাহিনীর হাতে বিপুল পরিমাণ টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) মালামালসহ আটক হয়েছেন, যা শুধু অপরাধই নয়, জনস্বার্থবিরোধী একটি কাজ।
তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো, এক সপ্তাহ না পেরোতেই তার পক্ষে কিছু অনুসারী মানববন্ধন করেছে, যেখানে তারা দাবী করেছেন যে, আবুল হাসেম ভূঁইয়াকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে এবং তার মুক্তি চান। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি শুধু টিসিবির মালামাল চুরি নয়, বরং গত ৫ই আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিলেন, যার মধ্যে গরু চুরি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং ক্ষমতার অপব্যবহার রয়েছে। তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় লেখালেখি হওয়ার পর কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপি তাকে দল থেকে নৈতিক স্খলনের অভিযোগে বহিষ্কার করে।
তবুও, এই বহিষ্কৃত নেতার পক্ষে প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে, যা রাজনৈতিক প্রভাবেরই একটি নিদর্শন। আরও অবাক করার মতো বিষয় হলো, এই কর্মসূচির ব্যানারে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালীর ছবি দেখা গেছে। একজন বহিষ্কৃত ও মামলার আসামির পক্ষে বিএনপির এক গুরুত্বপূর্ণ নেতার ছবি কীভাবে ব্যবহার হলো, তা একটি প্রশ্নবোধক বিষয়।
এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রভাব ও শক্তির অপব্যবহারকে সামনে নিয়ে আসে। অপরাধীদের পক্ষে দাঁড়ানো এবং তাদের মুক্তি দাবি করা শুধুমাত্র বিচারব্যবস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করে না, এটি সামাজিক স্থিতিশীলতাকেও নষ্ট করে। জনগণের স্বার্থরক্ষায় আইন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করা অত্যন্ত জরুরী।’