মাহবুবুর রহমান খান: নরসিংদীর রায়পুরা থানাধীন আমিরগন্জ ইউনিযনস্হ করিমগন্জ গ্রামে প্রাকৃতিক নৈসর্গিক দৃশ্য সম্বলিত বিলাস বহুল একটি বাড়ির নাম মায়ের আঁচল। সৃষ্টিশীল বিলাসী সৌখিন মানুষ ছাড়া অজ পাড়া গাঁয়ে এমন বাড়ি নির্মাণ করা কল্পনাতীত। সরেজমিন পরিদর্শনে জানা গেছে আন্তর্জাতিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স কনস্ট্রাকশন কোং এবং আমির গ্রুপের সি.ইও এমডি. এ. এইচ ভুঁইয়া ( MD.Amir Hossain Bhuiayan) সাহেব ২০০৭ সালে তিনি তাঁর পরলোকগত মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার নিদর্শন
হিসাবে”মায়ের আঁচল” নামে এই দৃষ্টি নন্দন বাড়িটি উৎসর্গ করেন।
বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলে মনে হবে এ যেন কোন স্যুটিং স্পট। ভিতরের আঙিনা যেন বাহারি ফুল ও ফলের গাছ শোভিত প্রকৃতির একটি মিলন মেলা। মায়ের আঁচলে প্রকৃতি যেন মিশে একাকার। কিন্ত দুঃখ জনক বিষয় হচ্ছে বাড়িটি নির্মাণের পর থেকেই একটি চক্র
বাড়ির নান্দনিক দৃশ্যের ক্ষতি সাধন সহ কয়েকবার সুকৌশলে বৈদ্যুতিক তার,দামি দামি লাইট
সুকৌশলে চুরি করে নিয়ে গেছে
এবং বাড়িতে আগুন লাগানোর
চেষ্টা করা হয়েছে বলে প্রতিবেশীদের সংগে কথা বলে জানা গেছে। কয়েক জন প্রতিবেশী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদক কে জানান,
কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত
এই বাড়ির মালিক ( Amir Hossain Bhuiayan) এখানে থাকেন না। তিনি ঢাকা গুলশানে থাকেন। আগে বছরে দু,একবার
ফ্যামিলী নিয়ে এলেও গত দু,বছর ধরে তিনি গ্রামের বাড়িতে আসছেন না।যখন আসেন আত্মীয় স্বজন সহ
পাড়া প্রতিবেশী সকলের খোঁজ খবর নেন।তিনি একজন দানশীল ব্যক্তি।গরীব অসহায় মানুষ কে
প্রচুর দান খয়রাত করেন। কেন
যে বাড়িটির ক্ষতি করার জন্য একটা চক্র ওঠে পড়ে লেগেছে তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছেনা।
এবার ঈদুল ফিতরের দুদিন পর
হঠাৎ বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের মত
একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে
বলে প্রতিবেশী সূত্রে জানা গেছে। ঈদের ২ দিন পর সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে বাড়ির ভিতরে যেখানে আইপিএস কন্ট্রোল রুম রয়েছে সেখান থেকে আগুনের ধূয়া বের হতে দেখেন প্রতিবেশীরা।তারা দ্রুত এসে বাড়ির দরজায় আঘাত করে বাড়ি রক্ষণা বেক্ষণের সার্বক্ষনিক দায়িত্বে
নিয়োজিত কেয়ার টেকার রফিক এবং বারেক মিয়াকে
ডাকতে থাকেন।১৫/২০মিনিট
ডাকা ডাকির পর ভিতর থেকে
কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে কয়েক জন প্রতিবেশী এবং পথচারী বাড়ির আঙিনার দেয়াল টপকে ভিতরে প্রবেশ করেন।কন্ট্রোল রুমের চাবি কেয়ার টেকারদের
কাছে থাকায় তাৎক্ষণিক তারা
কন্ট্রোল রুমে প্রবেশ করতে পারেন নি।অবশেষে তালা
ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেন এবং বিদুতের মেইন স্যুইচ
অফ করে আগুন নিভাতে সক্ষম হলেও ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে।
৩ টি আইপিএস এর দামী ব্যাটারি, সুইচ বোর্ড, সকল আইপিএস ক্যাবল বৈদ্যুতিক লাইনের সকল সংযোগ তার,বৈদ্যুতিক বাতি সহ সেখানে
রক্ষিত অনেক দামী মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষয় ক্ষতির পরিমান লক্ষাধিক টাকা বলে একজন প্রতিবশী জানিয়েছেন।প্রতিবেশীদের ধারণা ভিতরে ঢুকে কেউ তার উল্টা পাল্টা করে আগুন লাগিয়ে গেছে।ঘটনার সময় সিকুরিটি কাম কেয়ার টেকার দুজনের অনুপস্থিতিপ্রতিবেশীদের মনে আরো সন্দেহ বাড়িয়ে তুলেছে যা তারা প্রকাশ করতে পারছেনা এমন ভাব পরিলক্ষিত হয়েছে তাদের সাথে একান্ত আলাপ চারিতায়।
এ ব্যাপারে বাড়ির প্রধান কেয়ার টেকার + ইলেকট্রিক মিস্ত্রি রফিকের সংগে এই অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান ঘটনার সময় তিনি
ছিলেন না।তারপর তার কাছ থেকে অগ্নিকাণ্ডের তারিখ জানতে চাওয়া হলে সঠিক দিন
তারিখ বলতে পারেন নি।তার কথা বার্তায় বুঝা গেছে
তিনি ঈদের ছুটি কাটাচ্ছিলেন।তারপর তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, আরেক কেয়ার টেকার বারিক
মিয়া সম্পর্কে। রারিক কোথায় ছিল রফিক জানেনা বলে
জানিয়েছেন। তার মানে দাড়ালো, বেতন
ভুক্ত ২ জন নিয়মিত কেয়ার টেকার থাকলেও কারো
সাথে কারো কাজের সমন্বয় নেই।কে কখন আসে কখন যায় কেউ জানেনা। ২ জন কেয়ার টেকার
পালা করে রাত দিন বাড়ি পাহারা এবং নিরাপত্তার কাজে
সক্রিয়া থাকার কথা থাকলেও
কেউ সঠিক দায়িত্ব পালন করছেনা। রাতে বাড়ি পাহারায়
কেউ থাকে কী না এখন সন্দেহ
হচ্ছে। বাড়িতে অনাকাঙ্খিত ঘটনা এবং নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে এমডি. এ.এইচ ভুঁইয়া সাহেব
এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা
হলে ( তিনি তখন ব্যবসায়িক কাজে দুবাই অবস্হান করছিলেন) তিনি বিনয়ের সাথে
এই প্রতিবেদক কে জানান,তার বাড়িতে ২ জন সিকুরিটি এবং কেয়ার টেকার রয়েছেন।প্রধান সিকুরিটি এবং কেয়ার
টেকার রফিক একজন ইলেকট্রিশিয়ান।
দ্বিতীয় জন বারিক মিয়া। তাদের কে ২০০৭ সাল থেকে
নিয়মিত বেতন মাসোহারা দেয়া হচ্ছে।প্রতি ইংরেজি মাসের
২ তারিখ আমি তাদের বেতন দিয়ে আসছি।দিনে রাতে পালা করে তাদের ডিউটি করার কথা। কেউ
তা করছেনা।আমার বাড়িতে আগুন লাগার পর প্রতিবেশীরা জানলো সিকুরিটি কেউ জানলোনা। এই মুহূর্তে প্রতিবেশী
লোকজন যদি দেয়াল টপকে ভিতরে প্রবেশ করে তালা ভেঙ্গে ঘরে না ঢুকে বিদ্যুতের মেইন সুইচ অফ না করতো তাহলে আমার ৩ টি এসি,সকল ফার্ণিচার,আসবাব পত্র
সব পুড়ে ছাড়খার হয়ে যেতো। এমন ঘটনায় আমার বাড়ির নিরাপত্তা
কর্মিদের ভুমিকা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। এ অগ্নি কাণ্ডে কি পরিমান আর্থিক ক্ষয়- ক্ষতি হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?
এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,
আমি এখন ব্যবসায়িক কাজে দেশের বাহিরে দুবাই অবস্হান
করছি। স্বচক্ষে না দেখে কিছু
বলতে পারছিনা।আপনারা
সাংবাদিক,সমাজের দর্পণ
সমাজের অন্যায় অসংগতি গুলো খুঁজে বের করা আপনাদের দায়িত্ব। কি কারণে
কেন বার বার আমার বাড়িটি ঘিরে এমন ঘটনা ঘটছে
আমি বুঝে ওঠতে পারছিনা। এই ক্ল্যু
বের করার দায়িত্ব সাংবাদিক
এবং দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের
নিকট ছেড়ে দিলাম। আপনারা
এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করুন, কেন বার বার এই বাড়িটি ঘিরে এত নাশকতা?ভুঁইয়া সাহেব এর এই উক্তি
মেনে নিয়ে জনতার দেশ মাঠে নেমেছে এই রহস্য উদঘাটনে।