শাহ আলী তৌফিক রিপন
বিশেষ প্রতিনিধি
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের সাজিউড়া বাজার থেকে গোগবাজার সড়কের তেতুলিয়াস্থ ১৫৬ মিটার চেইনেজে নতুন একটি ১৬ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করার মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও, এখনো পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউনুছ এন্ড ব্রাদার্স পাইল-বোরিংয়ে বাঁধার সম্মুখীন হওয়ায় কাজ শুরু করতে পারেনি। পুরাতন ব্রিজ ভেঙ্গে অস্থায়ীভাবে বাঁশের মাছা (পাটাতন) তৈরি করা হলেও সেটি কয়েক মাসেই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
গত মে মাসে পুরাতন ব্রিজটি ভেঙ্গে রাজি নদীর উপর একটি সরু খালে বাঁশের মাছা তৈরি করা হয়। এতে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করলেও সেটি বর্তমানে ভেঙ্গে গিয়ে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তেতুলীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মাছাটির কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কিত থাকেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোতাহার হোসেন জানান, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। তিনি দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানান।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, নতুন ব্রিজটি নির্মাণের জন্য ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর কাজ শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। এক কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার টাকার এই প্রকল্পের আওতায় ব্রিজটির নকশায় সিঙ্গেল স্পেন এবং দুইটি আবাটমেন্টে ৬০০ মিমি ব্যাসের ৮টি করে মোট ১৬টি আরসিসি কাস্ট ইন সিচু পাইল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
গত ২০ মে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ পাশের পাইল পয়েন্টে বোরিংয়ের কাজ শুরু করে। তবে ৩ মিটার গভীরেই পুরাতন ব্রিজের বেইজে বাঁধার সম্মুখীন হয়। এক ঘণ্টার চেষ্টায় তা অতিক্রম করলেও ১০ মিটার গভীরে গিয়ে সমস্যাটি প্রকট আকার ধারণ করে। ২৮ মে, পুনরায় সোয়েল টেস্ট করার পর বোরিংয়ে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। এলাকা বাসীরা জানান, পুরনো ব্রিজের নির্মাণে গাছের বল্লী দ্বারা পাইলিং করা হয়েছিল, যা বর্তমানে কাজের বাধা সৃষ্টি করছে।
কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. আল আমিন সরকার জানান, সমস্যাটি সমাধানে নেত্রকোণা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে প্রকল্প পরিচালককে পত্র পাঠিয়েছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজের কাজ দ্রুত শেষ করা না হলে প্রতিদিন যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ব্রিজটির নির্মাণকাজে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছেন তারা।