কেন্দুয়া,নেত্রকোণা থেকেশা শাহ আলী তৌফিক রিপন
বিশেষ প্রতিনিধি দৈনিক জনতার দেশ।
নেত্রকোনা-০৩(কেন্দুয়া-আটপাড়া) হল বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৩০০টি নির্বাচনী এলাকার একটি। এটি নেত্রকোণা জেলায় অবস্থিত জাতীয় সংসদের ১৫৯নং আসন।
আওয়ামী লীগের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ছিল এই আসন । কেন্দুয়া সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এবং আটপাড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসনে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জনপ্রিয়তা বিবর্তিত হয়েছে।
সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট এম জুবেদ আলী পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে, ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নুরুল আমীন তালুকদারের জয়ে এ আসনের দৃশ্যপট পাল্টে যায়। পরে তাঁর মৃত্যুতে ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে তাঁর স্ত্রী খাদিজা আমীন জয়ী হন। এর ফলে, দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের আধিপত্য থাকলেও বিএনপির শক্তিশালী প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হয়।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মঞ্জুরুল কাদের কোরাইশী বিএনপির প্রার্থী ড. রফিকুল ইসলাম হিলালীকে পরাজিত করে আবারও এ আসনটি আওয়ামী লীগের হাতে আসে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল এবং ৫ আগস্ট পরবর্তী বাস্তবতায় আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে।
নেত্রকোনা-০৩ আসনে এবার বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী শক্তিশালী তিন প্রার্থী রয়েছেন, যারা দীর্ঘদিনের রাজনীতিক অভিজ্ঞতা এবং মাঠ পর্যায়ের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন। নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের মতে, এ তিনজনই দলের মনোনয়নের জন্য সবচেয়ে সম্ভাব্য প্রার্থী।
# সৈয়দ আলমগীর খসরু – বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হিসেবে তিনি দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সুপরিচিত। কেন্দুয়া-আটপাড়া অঞ্চলে তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা এবং গ্রুপিং লবিং এর বাইরে তার ক্লীন ইমেজ তাঁকে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রেখেছে।
# ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী – জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হিসেবে তিনি এ আসনের ভোটারদের কাছে পরিচিত একটি মুখ। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হলেও তিনি এখনও ব্যাপক সমর্থন পান এবং দলের ভিত্তিকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন।
# দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল – কেন্দুয়া উপজেলার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র দুলাল স্থানীয় তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন পরীক্ষিত নেতা। মাঠ পর্যায়ে রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন এবং ব্যাপক জনসমর্থন পেয়েছেন। কর্মীবাহিনী তাঁকে মনোনয়ন দৌড়ে শক্তিশালী অবস্থানে মনে করেন।
এছাড়াও, বেশ কয়েকজন প্রার্থী যেমন রোটারীয়ান নাজমুল হোসেন এবং ইঞ্জিনিয়ার সেলিম ও মেজর সিদ্দিকুর রহমান বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাঁরা ব্যানার-পোস্টার, গণসংযোগ ও ভোটারদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করছেন।
তবে তৃনমুল নেতাকর্মীদের মতে নেত্রকোনা-০৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী শক্তিশালী যে তিন প্রার্থী রয়েছেন, যাদের মধ্যে সৈয়দ আলমগীর খসরু গ্রুপিং লবিং এর বাইরে নিজের ক্লীন ইমেজে নিয়ে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বেশ সুপরিচিত। কেন্দুয়া-আটপাড়া অঞ্চলে তাঁর জনপ্রিয়তা এবং দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা তাঁকে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রেখেছে।
মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে তাঁর প্রতি আস্থা প্রবল এবং তাঁর সমর্থন বেইসটি অনেক বেশি সংগঠিত বলে মনে করা হয়।
অন্যদিকে, ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী এবং দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলালও সমানভাবে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। বিতর্কের বিষয় হচ্ছে ১৩ টি ইউনিয়ন অধ্যুষিত কেন্দুয়া বিএনপির সবচেয়ে বড়
ভোট ব্যাংক।এখানকার বিএনপির রাজনীতিতে অভ্যন্তরীন কোন্দল বিদ্যমান।একটি অংশের নেতৃত্বে
রফিক হিলালী অপর অংশের নেতৃত্বে কেন্দুয়া উপজেলা
এবং পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দুলাল এবং এডভোকেট নাজমুল হক কচি।তাদের দুজনের সাথে
রফিক হিলালীর সম্পর্ক সাপে- নেউলে। রফিক হিলালী
কে তারা ব্যক্তিগত ভাবে অপছন্দ করেন। রফিক হিলালী
বিএনপির দলীয় টিকেটে এমপি,হোক এটা তারা চান না।
বিগত সময়ে রফিক হিলালীর নির্বাচনে তারা তার পক্ষ
সমর্থন করে নির্বাচনি প্রচারণায় মাঠে নামেননি।তাদের
মূল ভাষ্য রফিক হিলালীর পৈত্রিক নিবাস মদন উপজেলার শিবপাশা গ্রাম আর দেলোয়ার হোসেন
দুলাল,নাজমুল হক কচি কেন্দুয়ার মূল বাসিন্দা।
সাধারণ ভোটারদের মাঝেও এই প্রতিহিংসা বিদ্যমান।
স্হানীয় বিবেচনায় ভোটাররা দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া
দুলাল এবং বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা
ড. সৈয়দ আলমগীর স্হানীয় হিসাবে যদি এই দুজনের একজন দলীয় মনোনয়ন পান তাহলে কেউ বিরোধিতা করবেনা।পক্ষান্তরে রফিক হিলালী যদি দলীয় মনোনয়ন
পান আর দুলাল চেয়ারম্যান কিংবা সৈয়দ আলমগীর
খসরু স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন তাহলে স্হানীয় হিসাবে
উল্লেখিত দুজনের পাল্লাই ভারী হবে এমন পরিসংখ্যান
কেন্দুয়া- আটপাড়ার সাধারণ ভোটারের।ড. সৈয়দ আলমগীর খসরু রাজনীতিতে নতুন হলেও একজন
সৎ,আদর্শবাণ মানুষ হিসাবে তাকে নিয়ে জল্পনা- কল্পনা
শুরু হয়ে গেছে।বিএনপি- আওয়ামী লীগ উভয় দলের
মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে ড. আলমগীর খসরু খালেদা
জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হওয়ার কারণে তিনিই
পাবেন দলীয় মনোনয়ন। তা ছাড়া তিনি একজন
আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। সাধারণ আমজনতার ভাষ্য
বিভিন্ন হামলা- হামলা,লুটপাট দুর্নীতির কবল থেকে
বাঁচতে হলে কেন্দুয়া – আটপাড়াতে আলমগীর সাহেব
এর মত নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই।