👤মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
গ্যাসের চাপ নেই। টিম-টিম করে জ্বলে চুলা।তাতে ভাত-তরকারি রান্না করা তো দুরের কথা সামান্য পানি গরম করতেই পেরিয়ে যাচ্ছে ঘন্টা খানেক সময়।অগত্যা হোটেলের খাবারে ভরসা এখন ঘরে ঘরে।আবার অনেকে মাটির চুলায় লাড়কির জ্বালানিতে সারছেন রান্না-বান্না।কারো কারো ঘরে তিতাস গ্যাসের অভাব পুরন হচ্ছে এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডারে।এ অবস্থা দেখার-কেউ নেই! আক্ষেপ গ্যাস ব্যবহারকারীদের।রাজধানীর কাছের মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় দিনের পর দিন গ্যাস সংকটের কারনে ঘরে ঘরে এমন ভয়াবহ চিত্র দেখা মিলেছে।সদর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা ও মিরকাদিম পৌরসভা জুড়ে গ্যাস সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে।চাহিদার তুলনায় অর্ধেক সরবরাহের কারনে এ সংকট দেখা দিয়েছে।এতে গ্যাসের অভাবে ধুকছে এখানকার প্রায় ১৪ হাজার পরিবার।বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা তথা জেলা শহরের মালপাড়া, মানিকপুর,উত্তর ইসলামপুর,হাটলক্ষ্মীগঞ্জ, দেওভোগ,খালইষ্ট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে অনেকের ঘরেই গ্যাস নেই।হাতে গোনা পরিবার গ্যাসের চুলোয় টিম টিম আলোতে রান্না সারছেন।
অনেক পরিবার মাটির চুলোতে লাড়কির জ্বালানীতে আবার কেউ কেউ এলপিজির সিলিন্ডারে রান্না করছেন।এসব পরিবারের অনেকেই সকালের খাবার খেয়েছেন হোটেল থেকে এনে।এদিকে,বাড়িতে তিতাস গ্যাসের সংযোগ থাকা সত্বেও শহরের হাটলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার গৃহিনী নাসিমা বেগমকে (৩৫) দেখা গেছে রান্না ঘরের বাইরে মাটির চুলোতে রান্না করতে।তিনি জানান, সকাল দুপুর কিংবা রাত কোন বেলাতেই গ্যাস মিলছে না কপালে।মাঝে মধ্যে গ্যাস এলেও তাতে চুলোতে টিমটিম করে জ্বলে আলো।এতে করে রান্না করা যায় না।খাবার রান্না করা এখন তাদের কাছে দুস্কর হয়ে উঠেছে।শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার গৃহিনী জান্নাতুল ফেরদৌস যুথী(৩০) সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন,মাঝে মাঝে রাত দশটার পর একটু গ্যাস পাওয়া গেলেও এক পাতিল পানি গরম করতে লাগে এক থেকে দের ঘন্টা,এই গ্যাসে কি রান্নাকরে খাওয়া যায় বলেন,আবার মাস শেষ হলেই ১০৮০/- টাকা গ্যাস বিল দিচ্ছি গ্যাস না পুরে।শহরের দেওভোগ এলাকার গৃহিনী লিপি বেগমের (৫০) সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন,ফজরের সময় উঠে গ্যাসের চুলোয় গরম পানি বসিয়ে নামাজে যাই।এতে দেখি পানি ঠিকমত গরম হয় নাই। পরিবারে তিনজন ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করে। ওদের ঠিকমত নাস্তা বানিয়ে দিতে পারি না।আর বিকেলেও ঠিকমতো গ্যাস থাকে না।রাতে বাচ্চাদের খাওয়াতে খাওয়াতে ১২ টা বেজে যায়।শহরের মালপাড়া এলাকার গৃহবধু শামীমা নাসরিন বেলী (৪৬) বলেন,দিনরাত মিলে ২৪ ঘন্টাই গ্যাস সংকটে ভুগছি।গ্যাসের চাপ এতোটাই কম যে,চুলোতে টিমটিম করে আলো জ্বলে।তাতে রান্না-বান্না করা বেশ সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।মুন্সীগঞ্জ নাগরিক সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুজন হায়দার জনি বলেন,মুন্সীগঞ্জে গ্যাসের সরবরাহ দিনদিন কমছে।গ্যাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রাহকরা।গ্যাস সংকট সমাধানে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।যেহেতু তিতাস কর্তৃপক্ষ বাসাবাড়িতে ঠিকমত গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না,সেহেতু আবাসিক লাইন গুলোর বিল নেওয়া বন্ধ রাখার দাবী জানাই।মুন্সীগঞ্জ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর ব্যবস্থাপক শাহ্ এমদাদ হোসেন জানান,মুন্সীগঞ্জ সদরে আবাসিক গ্যাস গ্রহক রয়েছেন ২৩ হাজার ৯৫৭ জন।এখানে ৭১ লাখ ঘন মিটার গ্যাসের চাহিদা রয়েছে।অথচ সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ৩৪ লাখ ঘন মিটার গ্যাস।তিনি বলেন,আমাদের চাহিদার অনুযায়ী অর্ধেকেরও কম পরিমান সরবরাহ পাই।গ্রাহকরা গ্যাস ব্যবহার না করে টাকা দিচ্ছে এ বিষয়টা আমাদের কাছে কষ্টদায়ক।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. মাহবুবুর রহমান খান, নির্বাহী সম্পাদক: মো. মিজানুর রহমান, বার্তা সম্পাদক: হাসান আইয়ুব বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়: ২নং শহীদ তাজউদ্দিন রোড, মগবাজার মোড় রাজ্জাক প্লাজা (৩য় তলা), ঢাকা -১২১৭।
মোবাইল: 01768387638 (সম্পাদক-প্রকাশক), 01716965924 (নির্বাহী সম্পাদক), 01727457562 (বার্তা সম্পাদক)।
আঞ্চলিক কার্যালয়: হাজেরা টাওয়ার (৩য় তলা), রেলওয়ে স্টেশন রোড (খালপাড়), নরসিংদী।
ই-মেইল: aiobhasanar@gmail.com
Copyright © 2025 Daily Janotar Desh. All rights reserved.