শাহ আলী তৌফিক রিপন ,বিশেষ প্রতিনিধি :
নেত্রকোণার কেন্দুয়া সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগের জটিলতার কারণে গত দুই মাস ধরে শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। এতে করে প্রতিষ্ঠানটির ৫২ জন শিক্ষক, ৮ জন অফিস স্টাফ এবং ১৮ জন মাস্টার রুলের কর্মচারী অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন। সামনে রমজান ও ঈদের খরচের কথা ভেবে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতি কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে এবং প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর কেন্দুয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদটি শূন্য হয়। এরপর ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ আব্দুল মালেক সাময়িকভাবে রুটিন মাফিক দায়িত্ব পালন করছেন। তবে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অধ্যক্ষের পদে ৭ জন প্রার্থী থাকলেও এখনো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে কোনো স্থায়ী সমাধান পাওয়া যায়নি। প্রভাষক মোহাম্মদ আব্দুল মালেক এ বিষয়ে বলেন, “আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে শূন্য পদটি পূরণ করে কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা হোক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।”
কলেজের অফিস সহায়ক মোঃ সাইফুল ইসলাম, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক স্বপন কুমার বনিক, ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মোঃ শওকত আলী, শরীরচর্চা শিক্ষক মোঃ আব্দুল হাই, সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক পলাশ রঞ্জন কর, অর্থনীতির প্রভাষক মোহাম্মদ মোতাসিম বিল্লাহসহ অনেকেই তাদের অসুবিধার কথা জানিয়েছেন। প্রধান অফিস সহকারী এনামুল হক বলেন, “একজন আয়ন ব্যয়ন কর্মকর্তা না থাকায় আমাদের বেতন বন্ধ রয়েছে। আমরা খুবই অসুবিধায় আছি। আমাদের দ্রুত অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রয়োজন।”
ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মোঃ আনিছুর রহমান আক্ষেপ করে বলেন, “দুই মাস ধরে বেতন বন্ধ। গত মাসে প্রায় ১ লাখ টাকা ঋণ করতে হয়েছে। সামনে রমজান ও ঈদ, কীভাবে চলবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।”
কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান আহম্মদ আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, “শিক্ষকতা মহান পেশা হলেও বেতন বন্ধ থাকায় আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ফর্ম পূরণ ও ভর্তির টাকা জমা দেওয়ার প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই শূন্য পদটি দ্রুত পূরণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাই।”
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, “এটি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিষয়। আশা করছি, খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”