শাহ আলী তৌফিক রিপন, বিশেষ প্রতিনিধি :
কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার সম্প্রতি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের তথ্য প্রদান থেকে বিরত থাকছেন এবং অফিসে বিল পাশ করাতে ৫% কমিশন প্রদানের বিষয়ে মন্তব্য করে প্রশাসনিক দুর্নীতির ইঙ্গিত দিয়েছেন।
সম্প্রতি, দৈনিক সমকাল এর কেন্দুয়া প্রতিনিধি সমরেন্দ্র বিশ্ব শর্মা-কে তিনি জানান, উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে বিল ছাড় করতে ৫% কমিশন দিতে হয়। তার দাবি, “আমার আগে যারা এখানে দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা হয়তো ৫% কমিশন দিয়ে বিল পাশ করিয়েছেন। আমি সেই অর্থ দিতে অস্বীকার করায় আমার বিল আটকে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর হস্তক্ষেপে বিল আংশিক ছাড় করা হয়।”
তবে, তার পূর্ববর্তী কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা গণমাধ্যমের কাছে জানান, তিনি কখনো এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হননি এবং কোনো ঘুষ বা অতিরিক্ত পার্সেন্টেজের দাবি তার জানা নেই।
অন্যদিকে, উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, “কৃষি কর্মকর্তার বিলে সাপোর্টিং ডকুমেন্টের ঘাটতি থাকায় বিল ফেরত দেওয়া হয়েছিল। এখানে কোনো অনৈতিক কমিশনের প্রশ্নই আসে না।”
গণমাধ্যম কর্মীরা এ ঘটনার পরপরই কৃষি কর্মকর্তার সাবমিট করা বিলের পরিমাণ জানতে চাইলে, তিনি অফিসের এক অনুপস্থিত স্টাফের দোহাই দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান। ফলে বিলগুলোর মধ্যে দুর্নীতির সন্দেহ আরও দানা বাঁধছে এবং জনমনে সন্দেহের মাত্রা বাড়ছে।
কৃষি কর্মকর্তার সাথে গণমাধ্যম কর্মীদের সাক্ষাতের সময় তার আচরণ অশোভনীয় ছিল এবং তিনি তথ্য না দিয়ে বিভিন্ন ভিন্ন প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। এমনকি অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরাও গণমাধ্যম কর্মীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন, যা সন্দেহজনক বলে প্রতীয়মান হয়।
অভিযোগ আছে, হুমায়ুন দিলদার নিজের প্রাক্তন চাকরির অভিজ্ঞতার দাম্ভিকতা দেখিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের উপেক্ষা করেন এবং কথায় কথায় “হাই কোর্ট” দেখান। যা সুশীল সমাজের কাছে অগ্রহণযোগ্য।
এই ঘটনা স্থানীয় প্রশাসনে স্বচ্ছতার অভাব এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করছে। কেন্দুয়া উপজেলার সাধারণ জনগণ ও কৃষকরা সরকারি সেবা পেতে দুর্নীতির শিকার হবেন না, সেজন্য স্থানীয় সচেতন মহল বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করছেন।
এই অভিযোগগুলোর সঠিক তদন্ত এবং সমাধান নিশ্চিত হলে কৃষি খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উন্নতি সম্ভব হবে, যা কৃষকদের ন্যায্য সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করবে।