শিরোনাম :
জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে জুলাই সনদ সই করেছে কিছু রাজনৈতিক দল -নাহিদ ইসলাম ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড একজন কমলদাশ গুপ্ত ও সংগীত ভুবন সংগীত জগতের বরেণ্য কণ্ঠ শিল্পী শাম্মী আকতার নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কোর্সের ৩য় ব্যাচের সমাপনী অনুষ্ঠান” আমিরগঞ্জ (রায়পুরা)হাসনাবাদ বাজারে দেড় কেজি গাঁজা সহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার গৌরীপুরে ডাক্তার মো: আব্দুস সেলিম এর উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল সেবা কার্যক্রম জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে প্রশাস‌নিক কর্মকর্তা‌কে শোকজ রায়পুরা উপজেলায় ( নরসিংদী) বিএনপির সকল কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা নরসিংদী জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত হয়েছেন।অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমদাদুল হক, নরসিংদী মডেল থানা,
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৪২ অপরাহ্ন

কুড়িগ্রামে চাকরি ছেড়ে ২ ভাইয়ে রশি তৈরির কারখানা

Reporter Name / ৩১৬ Time View
Update : রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫

নজির হোসেন ও নুর আলম দুই ভাই। ছোটবেলা থেকে একসাথে বড় হয়েছেন। নজির হোসেন ২০০১ সালে এসএসসি পাশ করেন। বাবা নুর মুহাম্মদ মাদরাসার শিক্ষক হলেও অল্প বেতনে সংসার চালানো কঠিন ছিল।

পরিবারের হাল ধরতে পড়ালেখা না করে ২০০৩ সালে মুন্সিগঞ্জের মুক্তাপুরে একটি দড়ির কারখানায় ৬ হাজার টাকা বেতনে শ্রমিকের কাজ নেন। ছোট ভাই নুর আলম কিছুদিন পর সেখানে মেকানিক্সের কাজ নেন। তারা দুই ভাই ২০ বছর চাকরি করে তেমন কোন উন্নতি না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজেরাই বাবার নিকট থেকে কিছু টাকা নিয়ে ধার দেনা করে ২ লাখ ৫০হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেন দড়ি তৈরির কারখানা। বর্তমানে তাদের কারখানায় চারজন শ্রমিক কাজ করছে। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের রাজবল্লভ গ্রামে নিজ বাড়িতেই ‘নজির হোসেন দড়ি ঘর’ নামে দড়ি তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মেশিনে সুতা দিয়ে দড়ি তৈরি হচ্ছে। আধাপাকা টিনশেড ঘরের মেঝেতে ১৫টি মেশিন বসানো হয়েছে। সেখানে নারী শ্রমিকরা কাজে ব্যস্ত তদারকি করছে নজির হোসেন নিজেই। সেখানে বিভিন্ন রঙের পাতলা, চিকট, মাঝারি ও মোটা সাইজের দড়ি তৈরি হচ্ছে। চাকরি ছেড়ে আসা স্বপ্নবাজ দুই ভাইয়ের চোখে মুখে হতাশার ছাপ এখনো কাটেনি। প্রতি মাসে আয়ের বিপরীতে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের। পুঁজির অপর্যাপ্ততা ও বৈদ্যুতিক লোডশেডিং এর কারণে এখনো তারা স্বনির্ভর ও স্বচ্ছল হতে পারে নাই।

উদ্যোক্তার বাবা মাদরাসা শিক্ষক নুর মুহাম্মদ জানান, ‘বড় ছেলে নজির হোসেন এসএসসি পাশ করে ২০০৩ সালে ঢাকায় একটি দড়ির কারখানায় চাকরি নেন। কিছুদিন পর ছোট ছেলে নুর আলম সেখানে কাজে যায়। দুইভাই সেখানে দীর্ঘদিন কাজ করলেও সন্তুষ্ট ছিল না। পরে তারা চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজেরাই বাড়িতে কারখানা গড়ে তোলেন।’ তাদের কারখানার তৈরি ফিতা রশি গ্রমাঞ্চলে গরু, ছাগল, ভেড়া বাঁধতে বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে ভ্যান, ট্রলি ও ট্রাকে মালামাল বাঁধার কাজে ব্যবহৃত হয়।

কারখানার শ্রমিক লাকী বেগম ও রওশন আরা জানান, আমাদের গ্রামে দড়ি তৈরির কারখানা গড়ে উঠবে কখনো ভাবতে পারি নাই। এটি তৈরি হওয়াতে বাড়িতে থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা করে হাজিরায় মজুরি পাচ্ছি। তাই দিয়ে দুই বছর থেকে সন্তান-সন্ততি নিয়ে সংসার চলাচ্ছি।

উদ্যোক্তা নুর আলম জানান, প্রথম দিকে চারটি মেশিন দিয়ে শুরু করি। পর্যায়ক্রমে তা বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১৫টি মেশিন কারখানা স্থাপন হয়েছে। বর্তমানে দৈনিক গড়ে ৬০ কেজি দড়ি উৎপাদন হচ্ছে যা তুলনামূলক অনেক কম। এর প্রধান কারণ হচ্ছে মেশিনগুলো বিদ্যুৎ চালিত আমাদের এলাকায় নিয়মিত বিদ্যুৎ থাকে না দিনে কমপক্ষে সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সময়ে দুই থেকে তিন ঘন্টা লোডশেডিং থাকে তাই উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে না। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

নজির হোসেন জানান, প্রথমে আড়াই লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। ৬ হাজার টাকা বেতনে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে আসি এত টাকা ছিল না। বাবা নিকট এ ধারদেনা করে কারখানা শুরু করি। তিনি আরো বলেন, দুই ভায়ের স্বপ্ন কারখানা বড় করা। এতে এলাকার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। তবে এর জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। সরকারিভাবে সহযোগিতা করলে উৎপাদন বাড়িয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ জোনায়েদ বলেন, তারা যোগাযোগ করলে তাদের সাথে কথা বলে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category