শিরোনাম :
গৌরিপুরে মাদক সহ শ্বশুর- জামাই গ্রেফতার জটিল রোগে আক্রান্ত শাম্মী বাঁচাতে চায় ম্যাজিস্ট্রেট সাজ্জাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ নরসিংদী ডিসি অফিসের কর্মচারীগণ সমন্বয়ক পরিচয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি, কে এই রফিকুল ইসলাম রিফাত ওরফে ট্যারা রিফাত? তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা ফেঁসে যেতে পারেন আড়াইহাজার থানার ওসি মো: এনায়েত হোসেন ভোলায় ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচিতে লাখো মানুষের ঢল আগামী জুন ২০২৫ এর মধ্যে পিলখানায় ৫৭ সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে- অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনুস কলাপাড়ায় কৃষকদের অবস্হান ধর্মঘট ও স্মারক লিপি প্রদান কেন্দুয়ায় এলডিডিপি প্রকল্পের উপকরণ বিতরণ প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে খামারিদের মাঝে ট্রলি, ল্যাক্টোমিটার, বার্মিজ ও বেলচা বিতরণ ঘোড়াশাল নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে প্রাণ আরএফ এল এর ড্রাইভার নিহত
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৪৭ অপরাহ্ন

সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের কুঠিরেই মারা গেলেন এমপি,জজ মিয়া।সকাল বেলার বাদশাহ যিনি ফকির সন্ধ্যা বেলা

Reporter Name / ৬৬ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

মাহবুবুর রহমান খান

দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য জজ মিয়ামারা গেছেন। এরশাদ জমানায় ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের দাপুটে এমপি। অর্থবিত্ত, প্রভাব-প্রতিপত্তি কোনকিছুরই কমতি ছিলনা। মানুষকে দান করেছেন উদারহস্তে।

অথচ কত নিরবে দৈন্য দশায় পতিত হয়ে চিকিৎসা বিহিন বেওয়ারিশ লাশ হয়ে বিদায় নিলেন পৃথিবী থেকে।কি নির্মম ট্র্যাজেডি।দুর্বা ঘাস থেকে শিশির ঝরার মত নিরবে। কেউ জানলনা। টিভি-পত্রিকায় ঘণ্টায় ঘণ্টায় ব্রেকিং, আলোচনা ছিলনা। জানাজার জমায়েত নিয়ে ফেসবুকের ওয়ালে আওয়াজ ছিলনা। তিনি মারা গেছেন
১১ জানুয়ারী ২০২৩ সালে।

কি কঠিন প্রস্থান ! শেষযাত্রায় পাশে কেউ ছিলনা, কিছুই ছিলনা তার। রোগেশোকে কাবু একসময়ে প্রভাবশালী এমপি জজমিয়ার তিনবেলা খাবারও জুটতনা। ছিলনা মাথার উপর একটু ছাউনিও। এরপর জায়গা হয় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে। সেখানেই আজ শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।

জীবনে কিছুই নিজের করে রাখতে চাননি। সব উজার করে দিয়েছেন। প্রথম স্ত্রী, মেয়েকে নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন আমেরিকায়। সঙ্গে নিয়েছেন অঢেল টাকা পয়সা। সন্তান-স্ত্রীর সুখের কথা চিন্তা করে তিনিও সব দিয়েছেন। বিনিময়ে পেয়েছেন বিবাহ বিচ্ছেদ।

এরপর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। স্ত্রী নাছিমা হক, দুই কন্যা বাবার থেকে আলাদা হয়ে যান। ঢাকার পুরানা পল্টন ও মিরপুর কাজী পাড়ায় বিশাল দুটি বাড়ি তাদের নামে লিখে দেন জজ মিয়া। স্থানীয়ভাবে থাকা সম্পদ বিক্রি করেও টাকা দেন তাদের। সবশেষ নিজের সম্পত্তি বলতে ছিল ১২ শতাংশ জমি, তাও লিখে দেন মসজিদের নামে।

রোগশোকে কাবু জজমিয়া কেবল টিকে থাকতে তৃতীয় বিয়ে করেন। ততদিনে তিনি নি:স্ব। ছোট্ট এক সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে একরুমের ভাড়া বাসায় কেটে যাচ্ছিল জীবন।

না জীবন সায়াহ্নে কেউ আসেনি। নিভু নিভু বয়ে চলা জীবনটাকে একটু উজ্জ্বল আলো দিতে ফিরে তাকায়নি সন্তানরাও ।

একসময়ের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য দু’মুঠো খাবারের জন্য মানুষের কাছে হাত পেতেছেন। সাবেক সেনা কর্মকর্তা, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ( সার্টিফিকেট নেননি) মাথা গোঁজার ঠাইয়ের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা নিয়েছেন। ওষুধের টাকার জন্যেও ঘুরেছেন দুয়ারে দুয়ারে।অন্যায় ভাবে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন নি।সততার মধ্যেই জিবন পাড়ি দিতে চেষ্ঠা করেছেন।মহান
আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের ছায়াতলে
আশ্রয় দিন।তার কাছ থেকে আমাদের পার্থিব জিবনে
অনেক শিখার আছে।সব উজার করে স্ত্রী,সন্তান কে
দিতে নেই।নিজের জন্য কিছু রাখতে হয়।জজ মিয়া

সংসদ সদস্য থাকাকালীন অজস্র মানুষকে চাকরি দিয়েছিলেন। সন্তানদের অভাব বুঝতে দেননি। বিবাহ বিচ্ছেদের পরেও সন্তানদের সুখের জন্য নিজের উপার্জিত সব দিয়েছেন।

কিন্তু একটাবারও কেউ ফিরে তাকায়নি। কেউ খবর নেয়নি জন্মদাতা কেমন আছেন ! দু:খ, কষ্ট, রোগ-শোক আর অভিমানে সেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে মারা গেছেন জজ মিয়া। কিন্তু একটা শিক্ষা দিয়ে গেছেন আমাদের।

প্রকৃতি বড় নির্মম। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। সম্পদ হাতবদলের সঙ্গে সঙ্গে মালিকানাও হস্তান্তরিত ও স্থানান্তরিত হয়। কখনো সব উজাড় করে কাউকে দিতে হয়না। ঘুরে দাঁড়াতে যতটুকু দরকার, ততটুকু অন্তত রাখতে হয়। নিষ্ঠুর পৃথিবীতে কেউ কারো নয়।

মানুষের আপন বলতে *নিজে* ছাড়া আদতে কিছুই নেই। তাই শেষ বয়সে নিজের জন্য আলাদা করে কিছু
ভাবুন নইলে জজমিয়ার মতো একই পরিণতি বয়ে আনবে
আপনার,আমার জিবনে।
প্রতিবেদক :সম্পাদক- প্রকাশক দৈনিক জনতার দেশ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category