শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও সমকালীন প্রসঙ্গ
Reporter Name
/ ৫৬
Time View
Update :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫
Share
জনতার ডেক্স রিপোর্ট :সম্প্রতি দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা নাশকতার অংশ বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পেয়েছে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে জানা গেছে, অগ্নিকান্ডের সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কারগো ভিলেজে। এটি একটি নিছক দুর্ঘটনা নয় বরং সুপরিকল্পিত নাশকতার অংশ। সূত্র জানায়, প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতে নিরাপত্তা সংস্থা এগুলো এই ঘটনার পেছনে আমদানি সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠানের যোগ সাজস চিহ্নিত করেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকপক্ষের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তাদের দেশ ছেড়ে পালাতে না পারার বিষয়ে তাৎক্ষণিক নজর দারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নাশকতার পরিকল্পনাকারীদের প্রধান লক্ষ্য ছিল দুটি এক, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা দুই, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদের নিরুৎসাহিত করা। বিমান বন্দরের মত দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনায় এমন বড় ধরনের নাশকতা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারায় পরবর্তী লক্ষ্য হিসেবে দেশের দ্রুত বিকাশ মান যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে মেট্রোরেলের নাশকতার পরিকল্পনা নিয়েছে বলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা গত পাঁচ দিনের মধ্যে একের পর এক তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তাদের নাশকতার প্রমাণ রেখেছে। তার প্রথম ধাপ শুরু হয় গত ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার। মিরপুরের রূপনগর এলাকায় একটি কেমিক্যাল গোডাউন ও তৎ সংলগ্ন পোশাক প্রিন্টিং কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে এতে আগুনে পুড়ে ১৩ জন মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। কেমিক্যাল গোডাউনে রাসায়নিক দ্রব্য থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং বিপুল পরিমাণ সম্পদের ক্ষতি হয়। এর রেষ কাটতে না কাটতেই ১৬ অক্টোবর চট্টগ্রামের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের( সিইপিজেড) ‘এডাম ক্যাপস এন্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামে একটি কারখানায় আগুন লাগে। এই ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ২৩ টি ইউনিট সহ সেনা নৌ-বাহিনীকে আরো বেশি সময় ধরে চেষ্টা চালাতে হয়। ওই অগ্নিকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ সম্পদের ক্ষতি হয় এবং কারখানার নয় তলা ভবনের আরসিসি কলামগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধারাবাহিক নাশকতার সর্বশেষ শিকার দেশের প্রবেশদ্বার হিসাবে চিহ্নিত হযরত শাহজালাল আন্ত র্জাতিক বিমানবন্দর। শনিবার বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি সেকশনের বিদেশী কুরিয়ার সার্ভিসের কারগো শাখায় ভয়াবহ অগ্নি কাণ্ডের সূত্রপাত হয় এর ফলে বিমানবন্দরের উড়োজাহাজ উড্ডয়ন সাময়িক ভাবে বন্ধ করতে হয়। যা দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির ওপরও প্রভাব ফেলে। আমদানি পণ্য, গার্মেন্টস কেমিক্যাল ও মেশিনারিজ পুড়ে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়। আগুন নেভাতে গিয়ে পঁচিশ আনসার সদস্য আহত হন। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করা এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে অস্থিরতা তৈরি করা। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলো জানতে পেরেছে, ষড়যন্ত্রকারীরা কেবল বিমানবন্দরে থাকতে চায় না তাদের পরবর্তী টার্গেট হিসেবে মেট্রোরেল কে বেছে নেওয়া হয়েছে। দেশের আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার অন্যতম প্রতীক মেট্রো রেলের উপর হামলা হলে জনগণের মধ্যে চরম আতংক সৃষ্টি হবে এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট অন্য আরেকটি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের পতনের পর দলটির বহু নেতা দেশ থেকে পালিয়ে যান। তাদের পরিকল্পনা ছিল গত আগস্টে ব্যাপক নাশকতার মাধ্যমে দেশে ফেরা। তারা অক্টোবর ডিসেম্বর মাসকে টার্গেট করে নাশকতায় নেমেছেন। এ বিষয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বাহাউদ্দিন নাসিম, মাহবুব আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক সহ কয়েকজন নেতা সমন্বয় করেছেন বলে জানা গেছে। পরিকল্পনাকারী গুরুত্বপূর্ণ নেতারা এখন দিল্লিতে পলাতক থেকে হাসিনার সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করার সুযোগ পাচ্ছেন। গত ১১ অক্টোবর ভারতের দিল্লিতে আসাদুজ্জামান কামাল ও নওফেল শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পর পরই দেশে ভয়াবহ তিনটি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সংস্থা গুলি কে চক্রান্তকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে তাৎক্ষণিক এবং সমন্বিত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা ও জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার (কে পি আই) জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা স্পষ্ট করে দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা গুলোর দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের উপরেই এখন নির্ভর করছে দেশ বিরোধী এর নাশকতামূলক কার্যকলাপকে প্রতিহত করা এবং পরবর্তী টার্গেটগুলোর হামলা টিকিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
তথ্য সূত্র:দৈনিক আমার দেশ
ও সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধি
বিমান বন্দরে কর্মরত কর্মকর্তা – কর্মচারী।