শিরোনাম :
ময়লা আবর্জনার স্তুপে পরিপূর্ণ হাসনাবাদ বাজার। নেই পানি নিষ্কাসনের সুব্যবস্হা। হারিয়ে যেতে বসেছে বাজারের প্রাচীন জৌলুস ঐতিহ্য। কুয়াকাটা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৬ লেন সড়কের দাবীতে মানববন্ধন। নরসিংদির বাবুর হাটে ব্যবসায়ী অরুন দেবনাথ হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন নরসিংদী জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষা-২০২৫ এর ২য় দিনের কার্যক্রম সম্পন্ন নরসিংদী ডায়বেটিক হাসপাতাল সমিতির নির্বাচন ২০২৫ নির্বাচনে বিজয়ী হলেন যারা। _________________________ গৌরিপুরে ( ময়মনসিংহ) ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা আদায় গৌরিপুরে মাদক সহ শ্বশুর- জামাই গ্রেফতার জটিল রোগে আক্রান্ত শাম্মী বাঁচাতে চায় ম্যাজিস্ট্রেট সাজ্জাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ নরসিংদী ডিসি অফিসের কর্মচারীগণ সমন্বয়ক পরিচয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি, কে এই রফিকুল ইসলাম রিফাত ওরফে ট্যারা রিফাত? তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৩ অপরাহ্ন

ময়লা আবর্জনার স্তুপে পরিপূর্ণ হাসনাবাদ বাজার। নেই পানি নিষ্কাসনের সুব্যবস্হা। হারিয়ে যেতে বসেছে বাজারের প্রাচীন জৌলুস ঐতিহ্য।

Reporter Name / ৬ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

মো:মাহবুবুর রহমান খান ঃ ধ্বংসের মুখোমুখি হাসনাবাদ বাজার। প্রতিটি দোকানপাট বাসাবাড়ির সামনে ময়লা আবর্জনার স্তুপ। বাৎসরিক কোটি টাকা বাজার থেকে আয় হলেও একটি টাকাও খরচ করা হয় না বাজারের উন্নয়ন কাজে।নরসিংদীর রায়পুরা থানাধীন আমিরগঞ্জ ইউনিয়নে শত বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী একটি বাজারের নাম হাসনাবাদ বাজার। একসময়ের খরস্রোতা আড়িয়ল খাঁ নদীর ধার ঘেষে এই বাণিজ্যিক জনপদটির উন্মেষ ঘটেছিল। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বস্ত্র ব্যবসায়ীগণ হাতে বোনা তাঁতের কাপড় যেমন,শাড়ি লুঙ্গি, গামছা সহ বিভিন্ন তাঁত বস্ত্র পাইকারি সরবরাহ করতে নদীপথে সড়কপথে ট্রেনে চড়ে হাসনাবাদ বাজারে এসে ভিড় জমাতো। হাজার হাজার ব্যবসায়ী আর ক্রেতা বিক্রেতাদের জনসমাগমে মুখরিত হয়ে উঠতো হাসনাবাদ বাজার। বাবুরহাট এর পরেই ছিল বৃহৎ পাইকারি বস্ত্রের হাট হাসনাবাদ বাজার।রায়পুরার এক মাত্র শিল্পাঞ্চল এই হাসনাবাদ বাজার কে ঘিরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প কারখানা, ব্যাংক- বীমা, এনজিও, পুলিশ ফাঁড়ি, স্কুল -কলেজ, ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাট সহ বিভিন্ন ইমারত। সরে জমিন বাজার পরিদর্শনে দেখা গেছে, বাজারটিতে নেই কোন পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। প্রতিটি অলিতে গলিতে বিল্ডিং, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ময়লা আবর্জনার স্তুপ। পানি ময়লা আর কাদায় সয়লাব সমস্ত বাজার। অর্ধ কোটি টাকা ব্যায়ে ্নির্মিত একমাত্র খেয়া ঘাটের প্রতিটি সিড়িঁ আবর্জনার স্তুপে পরিপূর্ণ। হাত পা ধোয়া অজু গোসলের স্থানটিও ময়লা আবর্জনা দিয়ে ভরে রাখা হয়েছে। বাজার পরিদর্শনের সময় দেখা গেছে হাসনাবাদ বাজারে ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন নদীর পাড় ঘেষে একটি দ্বিতল বিল্ডিং। পাশে তরি তরকারি ও মাছ বাজার। বিল্ডিংটির চতুর্পাশে ময়লা আবর্জনার পাহাড়। বিল্ডিংয়ের প্রবেশ পথে সকল দরজা ব্লক করে দিয়ে মাছ ব্যবসায়ীরা কাদা পানি আর ময়লা আবর্জনার উপরে চৌকি টুল ফেলে তার ওপর বড় বড় প্লাস্টিকের ড্রাম, ডেকচি বসিয়ে মাছের বাজার জমিয়েছে। মাছ ব্যবসায়ীদের ব্যবহৃত টোল,চৌকি বড়
বড় ডেগ ডেকচি, ভ্যান গাড়ি ঠেলাগাড়ির ব্যারিকেড ভেঙ্গে কাঁদা পানি ময়লা আবর্জনার উপর দিয়ে হেঁটে বিল্ডিং এর ভিতরে প্রবেশ করা কোনভাবেই সম্ভব নয় তার উপর দরজার সামনে কে বা কারা ইটের সুরকি, বালি রেখে প্রবেশদ্বার বন্ধ করে রেখেছে। অবস্থা দৃশ্যে মনে হয়েছে নান্দনিক এই বিল্ডিংটি যেন বাজারের সকল ময়লা আবর্জনা ফেলার ডাম্পিং স্টেশন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এই বিল্ডিং এর প্রকৃত মালিক আন্তর্জাতিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স কনস্ট্রাকশন কোং এবংআমির গ্রুপের সিইও এলাকার সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিআমির হোসাইন ভূঁইয়া সাহেব। যিনি দেশের বাড়িতে খুব একটা আসেন না। বর্তমানে তিনি ব্যবসায়ীক কাজে দুবাই অবস্থান করছেন। কেয়ারটেকারের মাধ্যমে তিনি তার নিজ বাড়ি এবং বাজারে নির্মিত এই বিল্ডিং এর তত্ত্বাবধান করে থাকেন। আশপাশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বিল্ডিংটির নিচতলার ভাড়াটিয়া এবং বিল্ডিং রক্ষণা বেক্ষনের দায়িত্বে নিয়োজিত কেয়ার টেকারের গাফিলতি এবং নজর দাড়ির কারণে এই বেহাল অবস্থা। নিচ তলার ভাড়াটিয়ার দায়িত্ব ছিল তার ঘরের সামনে বিল্ডিংয়ে
প্রবেশ করার সকল গেইটে বন্ধ করে মাছের বাজার সহ বিল্ডিংয়ের চারপাশে ময়লা অাবর্জনা ফেলতে নিষেধ করা। কিন্তু তিনি তা করেননি। এই নীরবতার কারণেই নোংরা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয় তরি তরকারি ও ফলমূল ব্যবসায়ীরা বাজারের পূর্ব পাশের রেললাইন দখল করে তরি তরকারি ফলমূলের নিয়মিত হাট বসিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে প্রাণহানি, রেল দুর্ঘটনা। বাজারের এই অব্যবস্থাপনার বিষয়ে হাসনাবাদ বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলামের সাথে তার মুঠো ফোনে কথা হলে, তিনি দৈনিক জনতার দেশকে এই অব্যবস্থাপনা এবং নোংরা পরিস্থিতির জন্য দায়ীকরেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং বাজারের ইজারাদার কে। তিনি বলেন,তাদের ফাণ্ডে বাজার উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য সরকারি বরাদ্দ রয়েছে। প্রতিবছর বাজার ইজারার একটি অংশ বাজার উন্নয়ন- সংস্কার কাজে কাজে ব্যয় করার বিধান থাকলেও এই কাজে একটি টাকাও খরচ করা হয় না। গত বছরও ২৬ লাখ টাকা হাসনাবাদ বাজারের বাৎসরিক ইজারা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব বাজারের বর্জ্য নিষ্কাশন ড্রেনেজ ব্যবস্থা সহ ব্যবসায়ীদের সকল সমস্যা দূরীকরণে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা এবং বাজারের সকল বর্জ্য আবর্জনা ফেলার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া। কিন্তু তিনি এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন না। আর বাজার ইজারাদার এর দায়িত্ব হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে প্রতি হাটবার সহ দৈনন্দিন বাজারের সকল ময়লা আবর্জনা তার নির্দিষ্ট লোক দিয়ে নির্দিষ্ট ময়লা আবর্জনা স্থানে ফেলে দেয়া।বাজার কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম আরো বলেন, আমাদের বাজার কমিটির কাছে বাজার উন্নয়ন সংস্কারের জন্য কোন সরকারি অনুদান কিংবা বরাদ্দ নেই। আমরা ঢাল তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সরদার। আমরা শুধু বাজার ব্যবসায়ীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে কাজ করি। যেমন নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক লেনদেন, দোকান ভাড়া, ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা আদায় সহ পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করে থাকি। বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতির বক্তব্যে এটাই প্রতিীয়মান হয়েছে যে বাজার অব্যবস্হপনা এবং সার্বিক পরিস্থিতির জন্য বাজার পরিচালনা কমিটি কোন ভাবেই দায়ী নহে। এহেন পরিস্থিতিতে মহা মুশকিলে পড়েছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ বিল্ডিং মালিকগণ।
এখন বাজারে নির্মিত প্রতিটি দালান বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে স্তুপ করে রাখা ময়লা আবর্জনা এবং নর্দমার পানি কে পরিষ্কার করবে? স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ? বাজারের ইজারাদার? নাকি বাজার পরিচালনা কমিটি? বিষয়টির সুষ্ঠু সুরাহা জানতে চান বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ বিল্ডিং মালিকগণ। এ ব্যাপারে বাজারের ইজারাদার জাকির হোসেনের সাথে কথা বলতে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। হাসনাবাদ বাজারের এই নৈরাজ্য,
অব্যবস্থাপনা এবং দায়িত্ব হীনতার সাথে যারা জড়িত রয়েছেন তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে দৈনিক জনতার দেশ নিবীড় ভাবে কাজ করছে।
সুপ্রিয় পাঠক, আপনারা চোখ কান খোলা রেখে এই নৈরাজ্য এবং ও ব্যবস্থাপনার সাথে যারা জড়িত তাদের তথ্য দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন।জনতার দেশ পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাদের সকল কে অভিনন্দন
ও শুভেচ্ছা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category