নিজস্ব প্রতিবেদক: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বীর চরমধুয়া গ্রামের বাসিন্দা কাজী সালমান এখন এলাকায় অপরাধ জগতের এক আতঙ্কের নাম। স্থানীয়দের অভিযোগ, বালু ব্যবসার আড়ালে তিনি গড়ে তুলেছেন ভয়াবহ এক অপরাধ সাম্রাজ্য। খুন, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, অপহরণ থেকে শুরু করে নারী পাচার— এমন কোনো অপরাধ নেই যা তার নামের সঙ্গে জড়িত নয় বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
সূত্র জানায়, মেঘনা নদী থেকে প্রথমবারের মতো বালু উত্তোলনের জন্য কাজী সালমান ৫০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে একটি ড্রেজার স্থাপন করেন। সেই থেকেই শুরু হয় তার অপরাধ কার্যক্রমের বিস্তার। ড্রেজার স্থাপনকে কেন্দ্র করে একাধিকবার মাঝনদীতে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে।
এই বালু উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ে চরমধুয়া, মির্জাচর ও শান্তিপুর — এই তিনটি গ্রাম। ভাঙনে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ তাদের বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
চর মধুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
চরমধুয়া কবরস্থান
বীর চরমধুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এছাড়া তৎকালীন রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী আসরাফুল আজিজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম কাজী নুরুল হক, কাজী চঞ্চল মাস্টার, এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আজিজ চেয়ারম্যানসহ অনেকের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় বলে জানা গেছে।
দলের কোনো পদে না থাকা সত্ত্বেও নিজেকে “সমন্বয়ক” পরিচয়ে তিনি নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গোপন সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি চরমধুয়ায় সংঘটিত একটি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহ করেন কাজী সালমান।
স্থানীয়রা আরও জানান, তার নেতৃত্বে এলাকায় চলছে মাদক কারবার, চাঁদাবাজি, খুন, গুম, অপহরণ এবং নারী পাচারের মতো ভয়ংকর অপরাধ।
বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রাশেদ হোসেন চৌধুরী সরেজমিনে গেলে তিনি এলাকাবাসীর তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়েন। পরবর্তীতে চরমধুয়া, মির্জাচর ও শান্তিপুর— তিন গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করলেও তাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
এলাকাবাসী জানান, গত সপ্তাহেও নদীভাঙনে আরও একটি অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন।