অনুসন্ধানী প্রতিবেদক ( দৈনিক জনতার দেশ)
বাংলাদেশ থেকে উন্নত জীবনের আশায় অনেকেই লিবিয়া হয়ে সাগরপথে ইতালি যেতে চান। তবে এই যাত্রা অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং প্রায়শই মানব পাচারকারী চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেকেই জীবন হারান বা চরম নির্যাতনের শিকার হন।
মানব পাচারের প্রক্রিয়া:
প্রলোভন: মানব পাচারকারীরা উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে লোক সংগ্রহ করে। তারা লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে মানুষকে প্রলুব্ধ করে।
নরসিংদী জেলার প্রধান মানব পাচারকারী বেলা উপজেলার জাকির, নয়ন, রায়পুরার তারেক, তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে মানব পাচারের একাধিক মামলা, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শন করে তারা চালিয়ে যাচ্ছে মানব পাচার ।
ভ্রমণ: প্রথমে ভুক্তভোগীদের বৈধ বা অবৈধ পথে লিবিয়া পাঠানো হয়। লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর তাদেরকে বিভিন্ন স্থানে আটক রাখা হয়।
জিম্মি ও মুক্তিপণ: লিবিয়ায় ভুক্তভোগীদের জিম্মি করে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে ভিডিও কলের মাধ্যমে পরিবারকে দেখানো হয়, যাতে পরিবার দ্রুত মুক্তিপণ প্রদান করে।
সাগরপথে যাত্রা: মুক্তিপণ পাওয়ার পর ভুক্তভোগীদের ছোট ও অনিরাপদ নৌকায় করে সাগরপথে ইতালি পাঠানো হয়। এই নৌকাগুলো প্রায়ই অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই থাকে, যা নৌকাডুবির প্রধান কারণ।
ঝুঁকি ও পরিণতি:
নৌকাডুবি: অতিরিক্ত যাত্রী ও অনিরাপদ নৌকার কারণে প্রায়ই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে, যেখানে অনেকেই প্রাণ হারান।
নির্যাতন: লিবিয়ায় জিম্মিদশায় ভুক্তভোগীরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন।
আর্থিক ক্ষতি: মানব পাচারকারীদের চাহিদা মেটাতে ভুক্তভোগীদের পরিবার জমি বিক্রি বা ঋণগ্রস্ত হয়, যা তাদের আর্থিকভাবে দুর্বল করে।
প্রতিরোধ ও সচেতনতা:
সচেতনতা বৃদ্ধি: মানুষকে এই বিপজ্জনক যাত্রার ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।
আইন প্রয়োগ: মানব পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
নিয়মিত অভিবাসন: নিয়মিত ও বৈধ পথে বিদেশে যাওয়ার প্রচার ও সুবিধা বাড়াতে হবে।
উন্নত জীবনের আশায় এই বিপজ্জনক পথে পা বাড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত। নিয়মিত ও নিরাপদ পথে অভিবাসনই হতে পারে সঠিক সিদ্ধান্ত।