জনতার দেশ রিপোর্ট :গতকাল ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মিরপুর রূপনগর শিয়ালবাড়ি এলাকায় পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার ঘটনায় অগ্নিকাণ্ডে পড়ে মারা গেছে ১৬ জন।আরো নিখোঁজ রয়েছেন ১৪ জন।স্বজনদের আহাজারি ও চিৎকারে ভারী হয়ে ওঠে বাতাস। এ ঘটনায় গতকাল রাত নয়টা পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায়  প্রধান উপদেষ্টা  শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায়  প্রধান উপদেষ্টা নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত  পরিবার গুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। গতকাল বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরের মিডিয়া সেল এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বিভিন্ন  গণমাধ্যম  কে জানান, আগুনের ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, নিহত দের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অগ্নিদগ্ধ   তিনজন জাতীয় বার্ন ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কা জনক। তারা হলেন মোঃ সোহেল সরদার মোঃ মামুন ও মোহাম্মদ সুরুজ্জামান। ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাঃ শাওন  বিন রহমান গতকাল রাতে বলেন এদের মধ্যে সুরুজ্জামানের ২ শতাংশ ওপর দুজন সামান্য পুড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক অপারেশন ও মেইনটেনান্সল লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী  সাংবাদিকদের বলেন আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনো সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনায় ফায়ারকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানে একসঙ্গে আগুন দেখেছেন। তাই আগুনের সূত্রপাত গুদাম না পোশাক কারখানা থেকে এ  ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি বলেন এ পর্যন্ত ১৬ টি লাশ  পেয়েছি। তবে আমাদের সার্চিং অপারেশন এখনো চলমান রয়েছে। অপারেশন কমপ্লিট হওয়ার পর ডিটেলস জানাতে পারব। পোশাক কারখানার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে এসব লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা নারী না পুরুষ বোঝা যাচ্ছে না।  লাশগুলো স্তুপাকারে ছিল। এর আগে সকাল ১১ টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগায়  তাৎক্ষণিক  ফায়ার সার্ভিসের  ছয়টি ইউনিট যুক্ত হয়।  প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেন নি ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বললেন, দুপুরে পৌনে বারোটার দিকে রূপনগরের শিয়াল বাড়ি এলাকার কসমিক ফারমা নামের একটি কেমিক্যাল গোডাউন পাশের পোশাক কারখানায় আগুন লাগার খবর পায়।পর্যায়ক্রমে ফায়ার সার্ভিসে ১২ টি  ইউনিট সেখানে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয় রাত ৯  টা পর্যন্ত পোশাক কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও রাসায়নিক গুদামের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফায়ার সার্ভিস এর অপর এক কর্মকতা বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ড্রোনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।  ঘটনার ভয়াবহতার কারণে সেখানে দায়িত্ব রত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীন সদস্যদেরও কমপক্ষে ৩০০ গজ দূরত্ব বজায় রেখে অগ্নি নির্বাপনের  অনুরোধ করেন তারা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, ঘটনাস্থলে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। মানুষের অবাধ চলাচলের কারণে আগুন নির্বাপন, উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হয়েছে।   উদ্ধারকারী  ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের  সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন  Rab, আনসার ও বি ইউ বি শিক্ষার্থী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবকরা। কোথা থেকে আগুনের উৎপত্তি হয়েছে জানতে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস ইউনিট। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ  এখনো জানা যায়নি।